তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ ভায়াগ্রা ।
তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ ভায়াগ্রা ।এই সম্পর্কে কিচুটা তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি।আপনি মনযোগ দিয় পড়লে আশা করি তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ ভায়াগ্রা ।এই বিষয়ে বিস্তর ধারণা পাবেন।
এই আর্টিকেলে তরমুজের বিভিন্ন উপকারিতা যেমন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তরমুজ কতটা সহায়ক, পেশী ব্যথা, রক্তচাপের ক্ষেত্রে এবং ক্যান্সার বিরোধী হিসেবে তরমুজ কতটা ভূমিকা পালন করে সেটা সম্পর্কে এবং তরমুজের অপকারি দিক যেমন পেটের সমস্যা হজম ,ডায়াবেটিস ,লিভার এবং কিডনির সমস্যা করে এই সকল বিষয়ে তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি
ভূমিকা
গরমের ক্লান্তি দুর করতে চলে এসেছে লাল টুকটুকে একটি ফল । যার নাম তরমুজ বা ইংরেজিতে Watermelon । বৈজ্ঞানিক নাম Citrullus lanatus . পুষ্টির দিক থেকে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার । তরমুজে আছে উল্লেখ্য যোগ্য পরিমাণ ভিটামিন ,মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। প্রতি ১০০গ্রাম তরমুজে ৯২% পানি, ৩০ কিলোক্যালোরি শক্তি, ০.৬১ গ্রাম আমিষ, ০.১৫ গ্রাম চর্বি ,০.৪গ্রাম আঁশ, ৬.২ গ্রাম শ্বেতসার, ২৩০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন, ৫৬৯ওট ভিটামিন এ, ০.৪৯৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি, ৮.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ,১১২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম ,৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১১ মিলিগ্রাম ফসফরাস ও ০.২৪ মিলিগ্রাম লৌহ রয়েছে। তাই তরমুজ আমাদের শরীরের জন্য অত্যান্ত উপকারি একটি ফল। তবে মাত্রা অতিরিক্ত খেলে কিছু সমস্যার মুখমুখি হতে হই। তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ ভায়াগ্রা এই বিষয়ে আরোচনা করব।
তরমুজ খাবার উপকারিতা
তরমুজের উপকারিতা অনেক । তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা, তরমুজ ভায়াগ্রা হিসেবে কাজ করে। তবে এত সব উপকারিতার ভিড়ে কয়েকটি সেরা স্বাস্থ্যগত উপকারিতা তুলে ধরা হল।
পানির চাহিদা মেটাটে সহায়ক
কথিত আছে পানির অপর নাম জীবন। আর তরমুজে আছে প্রায় ৯২% পানি। তাহলে বুঝতেই পারছের সারাদিনের পরিশ্রম বা শরীরের পানির ঘাটতি পুরনে তরমুজ কতটা সহায়ক।
ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে তরমুজ
তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। ভিটামিন এ ও সি ত্বক সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি ত্বক কোমল রাখে ও চুল শক্ত করে।অপর দিকে ভিটামিন এ ত্বকে নতুন কোষ তৈরিতে ও কোষের ক্ষতপূরণে সহায়তা করে। এছাড়াও লাইকোপিনসহ বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধতরমুজ খাবার অভ্যাস করলে সহজে মুখে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে না।
পেশী ব্যথা উপশমে সহায়ক
তরমুজের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল অ্যামাইনো অ্যাসিড। শরীর চর্চার পর মাংশ পেশীতে যে ব্যথা অনুভব করি ,সেই ব্যথা উপশম করতে তরমুজেুর এই অ্যামাইনো অ্যাসিড সহায়তা করে। এই অ্যামাইনো অ্যাসিড মাংশ পেশীর ব্যথা উপশমে সহায়তা করে। তবে লক্ষণীয় বিষয় যে, তরমুজের জুসে চিনির পরিমাণ বেশী থাকে ,সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হতে পারে। তাই তরমুজের জুস না খেয়ে সরাসরি তরমুজ খাওয়া ভাল।
রক্ত চাপ স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক
তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম। আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তরমুজের পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সহায়তা করে। চিকিৎসকরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তরমুজ রাখতে বলেন।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক
আপনি বলেন তো চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায় কোন ভিটামিন। আপনি নিশ্চয় বলবেন ভিটামিন এ। তরমুজ ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল । প্রতি ১০০গ্রাম তরমুজে আছে ৫৬৯ওট ভিটামিন এ । তাহলে আপনি বুঝতেই পারছেন আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে তরমুজ কতটা সহায়ক।
ক্যান্সারবিরোধী ভূমিকা রাখতে পারে
তরমুজে রয়েছে লাইকোপেন ও কিউকারবিটাসিন ই নামের দুইটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই লাইকোপেন ও কিউকারবিটাসিন ই হইতো বা ক্যান্সারবিরোধী ভূমিকা করতে পারে। যদিও গবেষকদের মতভেদ আছে, তরমুজের লাইকোপেন মলদ্বারের ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সহায়তা করে। তরমুজে থাকা কিউকারবিটাসিন ই ক্যান্সারযুক্ত কোষ অপসারণ করে টিউমার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।
তরমুজ খাবার অপকারিতা
সুস্বাদু ও সুমিষ্ট ফল তরমুজ। তরমুজের যেমন বিভিন্ন ধরনের উপকারি দিক আছে , ঠিক তেমনি আছে কিছু খারাপ দিক। আসুন জেনে নিই তরমুজের অপকারিতা গুলো।
পেটের সমস্যা
তরমুজ ফাইবারে ভরপুর । তাই অতিরিক্ত তরমুজ খেলে ডায়াবেটিসসহ পেটের নানা রকমের সমস্যা হতে পারে। তরমুজে রয়েছে সরবিটল ও লাইকোপিন নামক উপাদান যা বেশী পরিমাণে খেলে ডায়াবেটিস, গ্যাস , মোশন লুজ সমস্যা হতে পারে।
হজম সমস্যা
তরমুজের রং গাঢ় ও উজ্জল করে তরমুজের লােইকোপিন নামক উপাদান টি। লাইকোপিন হল এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মাত্রা অতিরিক্ত খেলে পেটের নানা রকমের সমস্যা হতে পারে। এমন কি হজম সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস
তরমুজকে বলা যায় সর্বগুণে গুণানিত । অর্থ্যাৎ বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর। তরমুজে শর্করার থাকে অনেক বেশী। তাই প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে তরমুজ খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
লিভারের ক্ষতি
আমরা জানি যে, তরমুজে যথেষ্ট পরিমাণে লােইকোপিন নামক রাসায়নিক উপাদান থাকে। তাই যারা নিয়মিত মদ্য পান করেন তাদের জন্য তরমুজ খাওয়া একদম উচিত নয়। কারণ তরমুজের লােইকোপিন নামক রাসায়নিক উপাদান অ্যালকোহলের সাথে মিশে লিভারের নানা রকম ক্ষতি করতে পারে।
কিডনি সমস্যা
তরমুজে পানির পরিমাণ প্রাং ৯২ শতাংশ। বেশী পরিমাণে তরমুজ খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্তে সোডিয়ামের পরিমান কমে যায়। রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীর ক্লান্ত লাগতে পারে ,হাত-পা ফুলে যেতেও পারে।
তরমুজ ভায়াগ্রা
তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা থাকলেও তরমুজকে প্রাকৃতিক ভায়াগ্র বলা হয়। বৈাহিক জীবন অনেকটাই টিকে থাকে যৌন মিলনের জন্য। অধিক মানসিক টেনশন ,কাজের চাপের কারণে যৌনজীবনে নেমে আসে কালো অন্ধকার । এই অন্ধকার থেকে রেহাই পেতে অনেক ভায়াগ্রায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন। এই ভায়াগ্রা আসক্ত শরীরের জণ্য খুবই ক্ষতিকর।
কিন্তু এটা জানেন কি এই রাসায়নিক ভায়াগ্রা থেকেও শক্তিশালী একটি প্রাকৃতিক ভায়াগ্র ফল আছে । এই ফলটি হলো তরমুজ। এটা প্রমাণ করেছেন টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। তাদের যারা যৌনতায় দুর্বল তাদের জন্য নিরাপদ ভায়াগ্রা হলো তরমুজ। নিয়মিত তরমুজের বানানো জুস খেলে যৌন উত্তেজনা বাড়তে পরে কয়েকগুণ।
তরমুজে থাকে “সিট্রোলিন” নামের অ্যামিনো এসিড, যা শরীরকে প্রতিমূহূর্তে সতেজ রাখে। সিট্রোলিন অন্য অ্যাসিডে রূপান্তর করতে পারে, যাকে আরজিনাইল বলে। সিট্রোলিন নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়ে রক্তনালীকে প্রসারিত করে, ফলে পুরুষাঙ্গে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি পাই। পুরুষের যৌনশক্তি বাড়ে। তাহলে বুঝলেন ,তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা সাথে সাথে এটি ভায়গ্রা গুণ সম্পন্ন ।
শেষ কথাঃতরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ ভায়াগ্রা ।
পরিশেষে বলে যায় এত সব অপকারিতা দেখে তরমুজ খাওয়া আবার বন্ধ করে দিবেন না। এটি অত্যান্ত পুষ্টিগুনে ভরা একটি ফল। তাই তরমুজ খাবেন অন্তত সপ্তাহে ২ দিন। মাত্রা অতিরিক্ত খাবেন না তাহলে কোন সমস্যা হবেনা ইনশা আল্লাহ।
তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা। তরমুজ ভায়াগ্রা এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন ,অজানা কোন তথ্য যদি জানতে পারেন বা ভাল লাগে তাহালে আপনি আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করুন এবং আপনার ভাল লাগা খারাপ লাগা মন্তব্য করুন ।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url