পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এবং দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত এই বিষয় সম্পর্কে অনেক খুঁজে খুঁজি করেছেন। হয়তোবা সঠিক তথ্য পান নাই। এই আর্টিকেলের মধ্যে আমরা পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা ,খাওয়ার নিয়ম, দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া উচিত এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো এসব বিষয় নিয়ে আপনাকে জানানোর চেষ্টা করছি।
এই আর্টিকেলে আপনার জন্য পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো এই বিষয়ে ছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোকপাত করেছি, সেটা হচ্ছে একটি খেজুরে কি কি পুষ্টিগুণ আছে ,তা আমরা এ আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরেছি ,আশা করি আপনি জেনে গর্বিত হবেন।
খেজুর
খেজুর শাখা বিহীন একবীজপত্রী উদ্ভিদ অনেকে একে তাও জাতীয় শাখা বিয়ান বৃক্ষ বলে খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা( Phoenix dactylifera)। খেজুর গাছকে মরুভূমির বৃক্ষও বলা হয়।
খেজুরের পুষ্টিগুণ
খেজুর মুসলমানের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফল। গুনে মানে খেজুরের তুলনা হয় না। খেজুর চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খেজুরের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ খাদ্য উপাদান থাকে। ক্লান্তিহীন ভাবে পরিশ্রম করতে চান তবে খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন শুকনো খেজুর রাখুন। কারণ খেজুর রয়েছে উচ্চমাত্রা ক্যালরি ।
এটি দুর্বলতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে। খেজুর মহিলা পুরুষ উভয় খেতে পারে। মহিলাদের ত্বকের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী একটি ফল এবং অন্যদিকে পুরুষদের যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সন্ধেহোর কোন অবকাশ নাই যে সে শুকনো খেজুর একটি পুষ্টিকর ফল।
যা আমাদের প্রয়োজনীয় প্রোটিন , ভিটামিন ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ এগুলো সামরিকভাবে সুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে যত্ন নেয়। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা ,খাওয়ার নিয়ম এবং দিনে কয়টি খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো তা জানার জন্য, খেজুরের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো। প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের পুষ্টিগুণঃ
- শক্তি ১১৭০ কিলো জুল
- কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৯ ৫গ্রাম
- শর্করা ৭৫.৫ মিলিগ্রাম
- চিনি ৬৩.৩০ গ্রাম
- খাদ্য আঁশ ৮.১ গ্রাম
- স্নেহ পদার্থ ০.৪০০ গ্রাম
- প্রোটিন ২.৪০ গ্রাম
- ভিটামিন এ ১০ আই ইউ
- ভিটামিন বি১ ০.০৫১ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি২ ০.০৬৫ মিলিগ্রাম
- নায়াসিন বি৩ ১.২৭ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন বি৬ ০.১৬০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি ০.৫ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন কে ২.৭ মাইক্রগ্রাম
- পটাশিয়াম ৩৯ মিলিগ্রাম
- লৌহ ১.৫ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ৪৫ মিলিগ্রাম
- ম্যাঙ্গানিজ ২.৬০ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস ৬০ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম 650 মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম
- জিংক ০.৩০ মিলিগ্রাম
- আয়রন ০.৯৫ মিলিগ্রাম
- পানি ২০.৬০ গ্রাম
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
খেজুর পুষ্টি সুমিষ্ট ফল ।খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম, দিনে কয়টা খাওয়া উচি , এই সকল বিষয় এ অনেকেই জানেনা ।এখানে আমরা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা কি সেটা জানার চেষ্টা করব। আরও জানি পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা।
খেজুরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান মানুষের চিন্তা ভাবনার প্রতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে সেসঙ্গে স্নায়ুর তন্ত্রের কর্মক্ষম ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে তাই বয়স খেজুর খাওয়া শুরু করুন মস্তিষ্ক ভালো থাকে
খেজুর একটু সুমিষ্ট ফল চিনি বিকল্প হিসেবে আমরা খুঁজে ব্যবহার করতে পারি খেজুরের প্রচুর পরিমাণ প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি বাড়ে যদি ক্লান্ত আপনাকে ঘিরে ধরে তাহলে নিয়মিত খেজুর খেতে শুরু করলাম
খেজুরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের মধ্যে একটি অন্যতম উপাদান হচ্ছে ফাইবার যা খেজুরে প্রায় আট গ্রামের মতো রয়েছে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ফাইবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাই আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য নির্মিত খেজুর খাওয়া
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খেজুরের কোন জুড়ে নেই খেজুরে রয়েছে পাশ্চাত্য পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের ভোগে থাকেন তাহলে নিয়মিত খেজুর খান দেখবেন আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে গেছে
খেজুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি ফল। খেজুর অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়া ক্ষেত্রে খুব দ্রুত কাজ করে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া যায়
খেজুরে এত রকমের ভিটামিন থাকে যে ,খেজুরকে ভিটামিনের পাওয়ার হাউজও বলা যেতে পারে। আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভাল রাখতে হলে ভিটামিন এ এর যথেষ্ট পরিমান যোগান দিতে হবে। আর খেজুরে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ রয়েছে। তাই দৃষ্টিহীনতা থেকে রক্ষা পেতে খেজুর খাবার অভ্যাস গড়ে তুলা উচিত।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরণের মংশ পেশী সমস্যা দেখা দেয়। আর মংশ পেশীর সমস্যা সমাধানে প্রোটিন কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আর খেজুর হচ্ছে প্রোটিন সমৃদ্ধ তাই আমাদের মাংসপেশী ভালো রাখতে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত।
বর্তমান সময় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকি বেড়েই চলেছে। এই হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকি কমাতে খেজুর সাহায্য করে। কারণ হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকি কমাতে সহায়তা করে পটাসিয়াম । কেজুরে প্রচুর পরিমাণে পাসিয়াম থাকে যার ফরে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকি কমাতে খেজুর ব্যপক সহায়তা করে। এছাড়াও খেজুরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে ,সেটা হরো খেজুর খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভাল কোলেস্টেরল এর পরিমাাণ বৃদ্ধি করে । তাহলে বুঝলেন তো আমাদের খেজুর খাবার অভ্যাস গড়ে তুলা কতটা দরকার।
যারা রক্তশূন্যতাই ভুকছেন । তাদের জন্য মুক্তির দিশারি হতে পারে খেজুর । কারণ খেজুরে আয়রনের পরিমাণ প্রায় ১ মিলিগ্রাম। তাই আসুন আমরা রক্ত মূন্যতা থেকে বাচতে নিয়মিত খেজুর খাই।
আপনি যদি যেীন দূর্বলতাই ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত খেজুর খান। কেননা নিয়মিত সঠিক পরিমাণ খেজুর খেলে আপনা যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। খেজুর এস্ট্রডিওল ও ফ্ল্যাভোনয়েড এ ভরপুর থাকে । আর এই এস্ট্রডিওল ও ফ্ল্যাভোনয়েড শুক্রাণু বৃদ্ধিতে ব্যাপক সহায়তা করে।
খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
সর্বগুণে গুনাণিত খেজুরের অপতাকিতা নাই বললেই চলে। তারপরও যেকোন জিনিস অতিরিক্ত খেলেই কিছু সমস্যা হয়। এখন আমরা খেজুর খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জাননার চেষ্টা করি।
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণ পটাসিয়াম থাকে। অতিরিক্ত পটাসিয়াম গ্রহণ কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তাই অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- মাত্রাতিরিক্ত খেজুর খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
- মাত্রাতিরিক্ত খেজুর খেলে বদহজন হতে পারে।
- খেজুর কে প্রাকৃতিক চিনির উৎস বলা হয় ।
খেজুর খাওয়া নিয়ম
খেজুর খেয়ে আমাদের শরীরে ভাল ফলাফল পেতে সঠিক নিয়মে খেজুর খেতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে খেজুর খেতে পারেন। প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে খেজুর খেলে আমাদের শরীরে সারা দিনের কাজের এনার্জি যোগায়। সেই জন্য প্রতিদিন রাতে খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে উঠে পানি সহ খেজুর খান।
প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের শরীর কে সবল বা শরিরীক ক্ষমতা বৃদ্ধি কলে। তািই আমাদের উচিত প্রতিদিন ব্যায়াম এর আধাঘন্ট আগে খেজুর খেলে আমাদের ক্লান্তি আসবে না। এবং আমাদের পেটের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। এছাড়াও আপনি যদি দুধের সাথে মিশিয়ে খেজুর খেলে আরও ভাল ফল পাবেন।
পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত এই প্রশ্নটি আমদের মাথায় ঘুরপাক খাই। আপনি প্রদিদিন ১০০গ্রাম বা ৩ থেতে ৫টি খেজুর খেতে পারেণ্ প্রতিদিন ১০০গ্রাম খেজুর খেলে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালোরি যোগাই। খেজুর খাবার পরিমানটা নির্ভর করে আপনার শরীরের সকবষমতার উপরে। আপনি যদি ওজন কমাতে চান এবং পানি যদি নিয়মিত খেজুর খান সেক্ষেত্রে আপনার ওজন কমার পরিবর্তে ওজন বেড়ে যাবে।
আবার যদি আপনার এলার্জি সমস্যা থেকে থাকে ,তবে নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে খজিুর খেলে আপনার এলার্জি সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাহলে সকল বিষয় বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি প্রদিদিন ১০০গ্রাম বা ৩ থেতে ৫টি খেজুর খেতে পারি ।
শেষ কথাঃ পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন সঠিক নিয়মে খেজুর খেলে আমরা খুব সজেই এর উপকারিতা পেতে পারি। আশাকরি আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা এই বিষয়ে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন। যদি এই বিষয়ে আপানার কোন কিছু বলার বা জানার থাকে , তবে আমারে কমেন্ট করতে ভুলবেন না।
পুষ্টিগুণ অনুযায়ী দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত-খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে লিখা এই আর্টিকেলটি আপনার ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের শেয়ার করুন। স্বাস্থ্য ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক অন্যান্য বিষয়ে আরও জানতে আমাদের ওয়েব সাইট ভিজিট করুন।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url