১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া

আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত অফুরন্ত। এই অফুরন্ত নিয়ামত গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সুস্থতা। কথিত প্রবাদ বাক্য আছে যে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই আমরা ১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া নিয়মিত আমল করি। স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আপনি যেকোন পরিস্থিতিতেই নিজেকে কমফোর্টেবল মনে করবেন।
১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
 আমরা সামান্যতম অসুস্থ হয়ে পড়লে কত টেনশন করে এবং কত ছোটা ছুটি করে কত ডাক্তার দেখায় আমাদের সুস্থতার জন্য। আল্লাহ তাআলা সর্বশক্তিমান তিনি সবকিছু করতে পারেন। তাই আমাদের উচিত সুস্থ অবস্থায় আল্লাহ তায়ালার কাছে পানাহ চাওয়া মাফ চাওয়া এবং সকল অসুস্থতা থেকে মুক্তি চাওয়া। আমরা সকল রোগ থেকে বাঁচতে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করতে পারি। এই ১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া করার জন্য আমাদের অবশ্যই প্রয়োজনীয় দোয়া গুলো মুখস্ত করে নিয়ম তা অনুযায়ী আমল করা উচিত।

অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করা

কোন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে তার জন্য দোয়া করার পাশাপাশি আমাদের অতীব জরুরী কাজ হচ্ছে তার সেবা করা। অসুস্থ ও সেবা দানকারী উভয়ের উচিত আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে সুস্থতা কামনা করে তার কাছে দোয়া করা ।

১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া

হাদীস শরীফে এসেছে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিয়ম ছিল তিনি যখন কোন রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তার কাছে যখন কোন রোগ অসুস্থ ব্যক্তিকে আনা হতো তিনি তাদের জন্য দোয়া করতেন।
পবিত্র কোরআনের কিছু আয়াত
রোগ থেকে মুক্তি লাভের দোয়া
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বান নাসি উজহিবাল বা’সি, ইশফিহি ওয়া আনতাশ-শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফায়ুকা শিফায়ান লা ইউগাদিরু সাকমা।
অর্থ : হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই।
এমন সুস্থতা দিন যেন কোনো রোগ না থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৫৭৪২)
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ.
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা  আফিনি  ফি বাদানি, আল্লাহুম্মা  আফিনি ফি সাময়ি; আল্লাহুম্মা  আফিনি ফি বাসারি।  লা  ইলাহা  ইল্লা  আনতা, আল্লাহুম্মা  ইন্নি আউজুবিকা  মিনাল  কুফরি  ওয়াল  ফাকরি।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবারি, লা ইলাহা ইল্লা আনতা।

أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণ : ‘আজহাবিল বাসা রাব্বাননাসি , ইশফি ওয়া আংতাশ শাফি লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন  লা  ইয়ুগাদিরু সাক্বামা।’
অর্থ : ‘কষ্ট দূর করে দাও, হে মানুষের রব! আরোগ্য দান কর, তুমিই একমাত্র আরোগ্যদানকারী

তোমার সুস্থতা ছাড়া অন্য কোনো সুস্থতা নেই। এমন সুস্থতা দান কর তা যেন সামান্যতম রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)।

এছাড়া আরও একটি দোয়ার কথা বলি য়ে দোয়াটি হাদিস শরিফ থেকে বর্ণনা করেছেন মুফতি আল-আমিন আড়াইহাজারী। এই দোয়াটি নিয়মিত আমল করলে যে ১০ টি রোগ থেকে মুক্তিসহ , যে কোন কাজে আল্লাহ রহমত দান করেবেন এবং সকল রোগ হতে হেফাজত করবেন। দোয়াটি অবশ্যই বিসমিল্লাহ সহ কারে পড়বেন।

 “বিসমিল্লাহিস শাফি বিসমিল্লাহিল কাফি বিসমিল্লাহিল ওয়াফি অকাফা বিল্লাহি ওয়াকিলা রব্বি আন্নি মাগলুবুং ফাংতাছির, ইয়া আল্লাহু ইয়া রহমানু ইয়া রাহিমু ইয়া কারিমু (সঃ)।”

হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তালার হাবিব রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এমন কোনও রোগই সৃষ্টি করেনাই যার প্রতিষেধক তিনি সৃষ্টি করেনাই।’ (বুখারী, খন্ড-২য়, পৃষ্ঠা-৮৪৮, হাদীস নং-৫২৭৬; তাফসীরে কুরতুবী, খন্ড-১০ম, পৃষ্ঠা-২৩৫)

আপনি যদি অসুস্থ হনে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাবেন চিকিৎসা নিবেন এবং ঠিক মত সেবা সশ্রূষা। এটা নবী করীম সাল্লাল্লাহু সালাম সুন্নাহ।
১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
পবিত্র কুরআনে আল্লাহতালা এমন কিছু আয়াত নাযিল করেছেন যে আয়াতগুলো আপনি যদি নিয়মিত আমল করেন, তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ। তাহলে চলুন আয়াত গুলো সম্পর্কে জানি-

পবিত্র কোরআনের কিছু আয়াত

১. সুরা তাওবার ১৪ নম্বর আয়াত।
وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ-  ওয়া ইয়াশফি  ছুদু-রা  ক্বাওমিম  মু’মিনি-ন।
অর্থ :  এবং  আল্লাহ  মু’মিনদের  ( মুসলমানদের )  অন্তরসমূহ  শান্ত করে  দেন।

২. সুরা ইউনূসের ৫৭ নম্বর আয়াত।
وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ : ওয়া  শিফাউ’ল  লিমা- ফিচ্ছুদু-রি  ওয়া  হুদাও  ওয়া রাহমাতুল  লিল  মু’মিনি-ন।
অর্থ :  এবং অন্তরের  রোগের  নিরাময়,  হেদায়েত  ও  রহমত  মুসলমানদের  জন্য।

৩. ছুরা নাহলের ৬৯ নম্বর আয়াত।
يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ
উচ্চারণ :  ইয়াখরুঝু  মিমবুতু-নিহা- শারা-বুম  মুখতালিফুন ,  আলওয়ানুহু- ফি-হি  শিফা-উ  লিন্না-সি।
অর্থ :  তার  পেট  থেকে  বিভিন্ন  রঙে  পানীয়  নির্গত  হয়। তাতে  মানুষের  জন্যে রয়েছে  রোগের প্রতিকার।

৪. সুরা বনী ইসরাইলের ৮২ নম্বর আয়াত।
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
উচ্চারণ :  ওয়া  নুনাজ্জিলু মিনাল  ক্বুরআ’নি মা  হুয়া  শিফাউও  ওয়া  রাহমাতিুল  লিলমু’মিনি-ন।
অর্থ : আমি  কোরআনে  এমন বিষয়  নাযিল করি  যা রোগের  সুচিকিৎসা  এবং  মুমিনের  জন্য রহমত।

৫. সুরা আশ-শেফা ৮০ নম্বর আয়াত।
– وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
উচ্চারণ :  ওয়া  ইজা মারিদতু  ফা হুয়া  ইয়াশফি-নি।
অর্থ :  এবং ( যখন  আমি  রোগাক্রান্ত  হই ,  তখন  তিনিই  আরোগ্য  দান  করেন)

৬. সুরা হা-মীম এর ৪৪ নম্বর আয়াত।
قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ آمَنُوا هُدًى وَشِفَاءٌ 
উচ্চারণ:  কুল  হুওয়া  লিল্লাযীনা  আ-মানূ  হুদাওঁ  ওয়া  শিফাউন।
অর্থ :  ( বলুন ,  এটা  বিশ্বাসীদের  জন্য  হেদায়েত  ও রোগের  প্রতিকার)

এখানে উল্লেখিত প্রতিটি আয়াতে আল্লাহ তা'আলা মুমিনের জন্য শিফা ও রহমত এর কথা উল্লেখ করেছেন। বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ, বুজুর্গ ও সব নিষ্ঠাবান আলেমগণ তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলে থাকেন, কোন একটি পানির ভর্তি পাত্র হাতে নিয়ে মুখের সামনে রেখে আয়াত গুলো দম করে পানি পান করলে আল্লাহ তায়ালা অতি সহজে রোগ থেকে মুক্তি দেন।

শেষ কথাঃ ১০ টি রোগ থেকে মুক্তির দোয়া।

আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লাগলে আপনি আপনার বন্ধুদের নিকট শেয়ার করুন। আল্লাহর তায়ালার যেখানে পথ অনুসরণ করুন এবং তদ অনুযায়ী আমল করুন এবং আপনি বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচুন এবং আপনার বন্ধুকেও  বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ করে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url