নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম - নতুন ই পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ। আপনি হয়ত নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম - আবেদন করতে কি কি লাগে এই সম্পর্কে অনেক খুজাখজি করেছেন। কিন্তু সঠিক তথ্য খুজে পাননি। এখানে আমরা আপনাকে নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম - আবেদন করতে কি কি লাগে এটাসহ আরও কিছু দিক তুলে ধরার চেষ্টা করব। 

আপনি যদি আপনার মূল্যবান সময়ের কিছুটা ব্যয় করেন আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকেন , তাহলে আশা করি আপনি নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন ।

ই পাসপোর্ট কি

একটি এমবেডেড ইলেকট্রিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ লাগানো পাসপোর্ট কে ই-পাসপোর্ট বলা হয়। ই পাসপোর্ট কে ইলেকট্রিক পাসপোর্ট বা বায়োমেট্রিক পাসপোর্টও বলা যায়, যেখানে একটি মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং এন্টেনা সহ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। ই পাসপোর্ট হল আন্তর্জাতিক দেশ ভ্রমণের লিখিত দলিল ।

যেখানে পাসপোর্টে পাসপোর্ট ধারির নাম , উপাধি , জাতীয়তা , জন্ম তারিখ এবং সেখানে আঙ্গুলের ছাপ , ফটো , স্বাক্ষর সহ যাবতীয় ডাটা ইলেকট্রিক মাইক্রোপ্রসেসের সংরক্ষিত থাকে। বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট বা ই পাসপোর্ট কে একটি বিশেষ ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে স্ক্যান করা হয়। ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার ফলে পাসপোর্ট জালিয়াতির পরিমাণ অনেকটা কমানো সম্ভব হয়েছে। ১১৯ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট এর প্রচলন শুরু হয় ।

ই পাসপোর্ট ফি কত

আপনি যদি পাসপোর্ট করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্ট ফি প্রদান করিতে হবে। ই পাসপোর্ট তিন ভাবে প্রদান করা হয়। প্রথমত রেগুলার বিতরণঃ এক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের তারিখ হতে ১৫ কর্ম দিবস বা ২১ দিনের মধ্যে প্রদান করা হয়। দ্বিতীয়ত জরুরি বিতরণঃ এটি সাধারণত ৭ কর্ম দিবস বা ১০ দিনের মধ্যে প্রদান করা হয়।

 তৃতীয়ত অতীব জরুরী বিতরণ এক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্টের তারিখ হতে দুই কর্ম দিবসে প্রদান করা হয়। এই তিন ধরনের বিতরণী প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে ফি নির্ধারণ করা হয়। সাধারণত ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ফি ৪০২৫ টাকা ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট ফি ৬৩২৫ টাকা ৪৮ পৃষ্ঠার দশ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট ফি ৫৭৫০ টাকা ৬৪ পৃষ্ঠার দশ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট 850 টাকা। এছাড়াও পাসপোর্ট এর তিনটি বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট নির্ধারণ করা হয় ।
  • নম্বর পাসপোর্ট এর মেয়াদ।
  • নম্বর পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা।
  • পাসপোর্ট ডেলিভারির ধরন।
আপনি যদি নতুনভাবে পাসপোর্ট করেন তাহলে আপনাকে এই তিনটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সেই প্রদান করতে হবে।

বিতরণের ধরণ

৪৮ পৃষ্ঠা

৪৮ পৃষ্ঠা

৬৪ পৃষ্ঠা

৬৪ পৃষ্ঠা


০৫ বছর

১০ বছর

০৫ বছর

১০ বছর

নিয়মিত

৪,০২৫ টাকা

৫,৭৫০ টাকা

৬,৩২৫ টাকা

৮,০৫০ টাকা

জররী

৬,৩২৫ টাকা

৮,০৫০ টাকা

৮,৬২৫ টাকা

১০,৩৫০ টাকা

অতিব জরুরী

৮,৬২৫ টাকা

১০,৩৫০ টাকা

১২,০৭৫ টাকা

১৩,৮০০ টাকা

ই পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর , পাসপোর্ট ফি নতুন ভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত নতুন ফি অনলাইন বা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। পাসপোর্ট এর মেয়াদ , পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা এবং ডেলিভারির ধরন বিবেচনায় বৈদেশিক ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এ (epassport.gov.bd) প্রকাশিত পাসপোর্ট ফি এর তালিকা তুলে ধরা হলো।

প্রদান করা যায় ।যেমন ব্যাংকের মাধ্যমে এবং অনলাইনে মাধ্যমে পোর্ট ই পাসপোর্ট সাধারণত তিন ভাবে বিতরণ করা হয় তার মধ্যে প্রথমটি হল রেগুলার বিতরণ বায়োমেট্রিক এনভারমেন্ট এর তারিখ হতে ১৫ কর্ম দিবস বা ২১ দিনের মধ্যে জরুরী বিতরণ বায়োমেট্রিক এনরোল হতে সাত কর্ম দিবস বা ১০ দিনের মধ্যে এবং ঐক্য জরুরি বিতরণ বায়োমেট্রিক এনরোল হতে দুই কর্ম দিবসের মধ্যে ভিত্তি করে নির্ভর করে।

ই পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে

বর্তমান যুগে ই পাসপোর্ট একটু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ই পাসপোর্ট তৈরি করতে কি কি জিনিস প্রয়োজন হয় এটা আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন এখন আমরা ই পাসপোর্ট করতে বা আবেদন করতে কি কি প্রয়োজন হয় একটু জেনে নেই।

  • ই পাসপোর্ট এর আবেদন অনলাইন এর রঙ্গিন কপি।
  • ই পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন এর সামারি কপি ।
  • পাসপোর্ট ফি প্রদানের চালান বা ব্যাংক ড্রাফ কপি।
  • নাগরিক সনদ বা চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট কপি।
  • পেশাগত সনদপত্রের কপি।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর ক্ষেত্রে ঠিকানা প্রমাণপত্র হিসেবে ইউটিলিটি বিলের কপি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ পত্রের ফটোকপি এবং মূল কপি।
  • পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যক।
  • যাদের পাসপোর্ট আছে তাদের পাসপোর্টের ফটোকপি এবং মূল কপি

ই পাসপোর্ট এর ছবি

বর্তমান সময়ে ছবি একটি অতীব জরুরী বিষয়। পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ছবির বিষয়টা অতি জরুরী বস্তু। আমরা সাধারণত সচরাচর ছবি তুলে থাকি কিন্তু ই পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ছবির বিষয়টা একটু আলাদা । বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যাদের বয়স ৬ এর নিচে তাদের থ্রি হার সাইজের ল্যাব প্রিন্ট গ্রে ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি জমা দিতে হয়। 

ছয় বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছে তাদের ছবি জমা দিতে হয় না। পাসপোর্ট এনরোলমেন্ট এর দিনে অফিসে গিয়ে ছবি তুলতে হয়। যেহেতু গ্রে ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি তোলা হয় সে ক্ষেত্রে আমাদের ড্রেসের ক্ষেত্রে নজর দিতে হবে , যেহেতু gree background এর ছবি উঠানো হয় সেজন্য আমাদের এনরোলমেন্ট এর দিন কালারফুল ড্রেস পড়ে যাওয়া উচিত।

নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

বাংলাদেশ ইলেকট্রিক পাসপোর্ট শুধু প্রবেশ করেছে। এই পাসপোর্ট এর উদ্বোধন করেছেন কোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পাসপোর্ট গ্রহণের মাধ্যমে । এই ইলেকট্রিক পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য আমরা এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারে। ই পাসপোর্ট আবেদন করতে হলে আমাদের নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম -আবেদন করতে কি কি লাগে সেটা জানা দরকার। 

চলুল আমরা ই পাসপোর্ট এর ধাপ গুলো জানি প্রথমে আমাদেরকে ww.export.combd ওয়েবসাইট লগ ইন করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের কয়েকটি ধাপ অবলম্বন করতে হবে প্রথম ধাপে আমাদের বর্তমান ঠিকানা যেমন জেলা শহর নাম থানা ইত্যাদি ক্লিক করে পূরণ করতে হবে । দ্বিতীয় ধাপে ব্যক্তিগত তথ্য সংশ্লিষ্ট ই পাসপোর্ট ফরম দিয়ে পূরণ করে সাবমিট করতে হয়।

 তৃতীয় ধাপে মেয়াদ এবং আপনার পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দিতে হবে যে কোন ব্যাংকে ডিফিকাল্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করতে পারে। কার্ড ছাড়াও আপনি অধিদপ্তর অনুমোদিত পাঁচটি ব্যাংকের যে কোন বিতে ফি জমা দিয়ে সেই জমাতৃপের নম্বর দিয়ে ফার্নি সাবমিট করতে হয় ফলে আপনার তথ্যগুলো পাসপোর্ট কার্যালয় চলে যাবে ।

পরবর্তী আপনাকে এনরোলমেন্টের দিনে আইডি কার্ড সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে বার গ্রামের বারোমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। পরবর্তীতে হটস্পট প্রস্তুত হয়ে গেলে আবেদনকারীকে জানানো হবে এবং আবেদনকারী উক্ত ই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতেন পারবেন।

কাগজের ফরম জমা দিয়ে ই পাসপোর্ট

আপনি চাইলে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ই পাসপোর্ট এর কাগজের ফরম নিয়ে সেটা পূরণ করে জমা দিলেও মিলবে আপনার পাসপোর্ট। ফর্মে আপনাকে ব্যক্তিগত 80 ধরনের তথ্য চাওয়া হবে। এই ফার্মটি ধরন আর এমপি থেকে কিছুটা আলাদা। কাগজের ফার্মে পাসপোর্ট এর মেয়াদ পাসপোর্ট এর পাতার সংখ্যা সহ আরো অন্যান্য তথ্য জানতে চাওয়া হয়। 

উল্লেখ্য যে আপনার যদি অতীব জরুরী হয় তাহলে আপনাকে নিজ উদ্যোগে গিয়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে হবে ।সে ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ফর্মে আপনাকে প্রি- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নম্বর ফর্মে উল্লেখ করতে হবে এবং সেটি আবেদনের সময় জমা দিতে হবে।

শেষ কথাঃ নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম -আবেদন করতে কি কি লাগে।

প্রতিদিন সঠিক নিয়মে নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম -আবেদন করতে কি কি লাগে জানলে আপনি উপকারিতা পেতে পারি। আশাকরি আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে  পাসপোর্ট করার নিয়মসহ আরও কিছু বিষয়ে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন। যদি এই বিষয়ে আপানার কোন কিছু বলার বা জানার থাকে , তবে আমাদের কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

নতুন ই পাসপোর্ট করার নিয়ম -আবেদন করতে কি কি লাগে, নিয়ে লিখা এই আর্টিকেলটি আপনার ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের শেয়ার করুন। স্বাস্থ্য ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক অন্যান্য বিষয়ে আরও জানতে আমাদের ওয়েব সাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url