নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে 2024
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ২০২৪আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ। আপনারা হয়তো নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে এই
বিষয়ে অনেক খোঁজাখুজি করেছেন কিন্তু সঠিক তথ্য খুঁজে পাননি।
আপনি যদি আপনার মূল্যবান সময়ের কিছুটা ব্যয় করে আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকেন
তাহলে আপনি আপনার বা আপনার শিশুর নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে সে সম্পর্কে
এ টু জেড একটা ক্লিয়ার ধারণা পেয়ে যাবেন।
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে
আপনি যদি আপনার পরিবারে কারো জন্য নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে চান তাহলে আপনাকে নতুন
জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি কাগজপত্র বা ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে ধারণা
রাখা খুব জরুরী।
জন্ম নিবন্ধন কি
জন্ম নিবন্ধন মূলত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০২৪ (২০২৪ সালের ২৯ নং আইন) এর
আওতায় একজন মানুষের নাম তার বাবা-মার নাম লিঙ্গ জন্ম তারিখ তার জাতীয়তা এবং
স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে ডাটা এন্ট্রি
প্রধান এবং জন্ম সনদ প্রদান করা।
এ জন্ম সনদ নিবন্ধনের সময় যে সকল তথ্য প্রয়োজন হয় সেই তথ্যগুলো সঠিক কিনা সেটা
যাচাই করার জন্য কিছু ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রের প্রয়োজন রয়েছে। অনলাইনে বাট
সার্টিফিকেট অ্যাপ্লিকেশন এর ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে উপযুক্ত কিছু তথ্য আপলোড না
করলে নিবন্ধন ভুল তথ্য দিতে বাধ্য হয় তাছাড়া আবেদন গ্রহণ না হওয়ার জটিলতাও
দেখা দেয়। তাই আপনি যদি নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে চান সে ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র
বা ডকুমেন্টের প্রয়োজন তা আপনি এ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানতে পারবেন।
নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে
এখন আমরা জানব নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে। জন্ম সনদদের জন্য
আবেদনকারী ব্যক্তির বয়সের ভিন্নতার কারণে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টনের ভিন্নতা
রয়েছে। সাধারণত কোন ব্যক্তি বা শিশুর বয়স যত বেশি হবে প্রমাণ হিসেবে তার
ডকুমেন্ট তত বেশি প্রয়োজন হবে।
আপনার যদি ২০২৪ সালে জন্ম নিবন্ধন করতে চান তাহলে ইপিআই টিকা কার্ড ট্যাক্স
পরিশোধের রশিদ পিতা-মাতার জন্ম-শোধন ওদের অনলাইন কপি এছাড়া অন্যান্য তথ্য
প্রয়োজন হবে। এছাড়া বয়স ভেদে যে কাগজপত্রের ভিন্নতা রয়েছে সেগুলোকে মূলত
তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। এগুলো হলো নিম্ন রূপ:
জন্ম নিবন্ধনের আবেদনকারী শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলে
আপনার শিশুর বয়স যদি শূন্য থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে হয় তাহলে নতুন জন্ম নিবন্ধন
করতে কি কি লাগে। নিম্নোক্ত কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট দরকার।
- ইপিআই কার্ড বা টীকা কার্ড বা হাসপাতালের ছাড়পত্র।
- হালসন বা যেই সনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করবেন সেই বছরের ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ এবং হোল্ডিং নাম্বার।
- জন্ম নিবন্ধনকারী শিশুর পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপি (বাধ্যতামূলক)।
- জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারী শিশুর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি যদি থাকে।
- জন্ম নিবন্ধনকারী শিশুর অভিভাবকের সচল মোবাইল নাম্বার।
নিবন্ধনাধীন শিশুর বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছরের মধ্যে হলে
আপনার শিশুর বয়স যদি ৪৫ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হয় তাহলে আপনাকে নিম্নোক্ত কাগজপত্র
গুলো সংগ্রহ করে আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদে বা উপজেলায় যোগাযোগ করতে হবে
সেগুলো হলো নিম্নরূপ।
- টিকা বা ইপিআই কার্ড বা হাসপাতালের হাসপাতালের রেজিস্টার্ড স্বাস্থ্যকর্মী সত্যায়িত প্রত্যয়ন পত্র শীল সহ।
- যে সালে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবেন সেই সালের ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ ও বাসার হোল্ডিং নাম্বার।
- জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদনকারী শিশুর পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি (বাধ্যতামূলক)।
- জন্ম নিবন্ধনকারী শিশুর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (যদি থাকে)।
- আবেদনকারী শিশু যদি বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সেক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এর প্রত্যয়ন পত্র প্রযোজ্য ক্ষেত্রে।
- আবেদনকারীর অভিভাবকের সচ্ছল মোবাইল নাম্বার।
জন্ম নিবন্ধনের আবেদনকারী ব্যক্তির বয়স ৫ বছর এর বেশি হলে
জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদনকারী ব্যক্তির বয়স যদি পাঁচ বছরের বেশি হয়
সেক্ষেত্রে কাগজপত্রের অনেকটাই জটিলতা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আপনাকে নিম্নোক্ত
কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
- জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারীর বয়স যদি পাঁচ বছরের বেশি হয় সেক্ষেত্রে বয়সের প্রমাণের জন্য রেজিস্টার্ড সরকারি এমবিবিএস বা তদরুদ্ধ ডিগ্রিধারী ডাক্তার দ্বারা সত্যায়িত প্রত্যয়ন পত্র সিল সহ।
- বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত জেএসসি বা এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সার্টিফিকেট যদি থাকে।
- নিবন্ধনকারীর পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি (বাধ্যতামূলক)।
- জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারীর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র বা এন আই ডি কার্ড এর ফটোকপি যদি থাকে।
- আবেদনকারীর জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণ করার জন্য হালনাগাদ কর পরিষদের রশিদ বা বাড়ি বা জমি ক্রয়ের দলিল।
- আবেদনকারীর ব্যক্তিগত বা অভিভাবকের সচল মোবাইল নাম্বার।
আপনার কাছে শুধুমাত্র কাগজপত্র গলো থাকলেই চলবে না কাগজপত্র পাশাপাশি আবেদনকারী
কে জন্ম নিবন্ধনের জন্য একটি অনলাইনে কিংবা হাতে লিখিত ফরম পূরণ করতে হবে। আপনার
কাছে যদি উপরোক্ত কাগজপত্র গুলো থাকে তাহলে আপনি আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদে
সেগুলো জমা দিয়ে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেন ।
আপনি চাইলে আপনি নিজেও জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারীর বয়স যত বাড়বে কাগজের জটিলতা তত বাড়বে। এক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ
ডকুমেন্টস না থাকলে রেজিস্টার জেনারেল এর কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের সাথে
যোগাযোগ করে আপনি সঠিক ব্যবস্থা বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যাবলী
শেষ কথাঃ নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে।
আপনার কাছে যদি উপর উল্লেখত কাগজপত্র থাকে, তাহলে আপনি অনলাইনে আপনার বা আপনার
শিশুর নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য করতে পারবেন। আশা করি আপনি উপরে আলোচনা থেকে নতুন
জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে কাগজপত্র দরকার সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা বা তথ্য
জানতে পেরেছেন। আপনার কাছে যে সকল ডকুমেন্ট থাকবে তার ওপর ভিত্তি করে আপনি জন্ম
নিবন্ধনের জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url