পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক

পাথরকুচির পাতা সকল রোগের মহৌষধ!আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ । আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনি হয়তো পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু সঠিক তথ্যটি আজ পর্যন্ত খুঁজে পাননি। 
পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক
আপনি যদি আপনার অমূল্য সময়ের কিছুটা সময় ব্যয় করে আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকেন এবং মনোযোগ সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি তাহলে আপনি পাথরকুচি পাতার উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন বিষয়ের জানতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ভূমিকা

বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদের অন্তর্গত হল পাথর। কুচি পাথরকুচির উপকারিতা সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। পাথরকুচি পাতা বা পাতার রস যদি আপনি নিয়মিত সঠিক মাত্রায় সেবন করে থাকেন বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। বিশেষত পাথরকুচি আপনার কিডনি বা গোল্ড ব্লাডারে পাথর গলাতে এর ব্যবহার সুপ্রাচীন থেকে হয়ে আসছে। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় এটি সুমনের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাহলে চলুন আমরা পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক ,সহ এটা খাওয়ার উপকারিতা খালি পেটে খেলে কি হয় এবং খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি।

পাথরকুচি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম

পাথরকুচি বহুত গুনে গুণান্বিত একটি বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। এটি Crassulaceae ফ্যামিলির অন্তর্গত। এর বৈজ্ঞানিক নেম Kalanchoe pinnata। এটি শান্ত দুই থেকে তিন ফুট লম্বা হয়ে থাকে। এর পাতা সাধারণত গোলাকার মসৃণ ও মাংসল টাইপের হয়ে থাকে।

পাথরকুচি পাতার উপকারিতা

কিডনির পাথর অপসারণঃ পাথরকুচি শব্দ শুনলে মনে হয় এটি পাথরের সাথে সম্পর্কিত। যেহেতু পাথরকুচি শব্দটির সাথে পাথর সংযুক্ত রয়েছে তাই এটি পাথরের উপর খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনার যদি কিডনি এবং গলব্লাডারে পাথরের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত দুই থেকে তিনটি পাথরকুচির পাতা চিবিয়ে অথবা রস করে খেলে আস্তে আস্তে আপনার কিডনি ও গলব্লাডারের পাথর অপসারিত হতে থাকবে।

পেট ফাঁপাঃ পেট ফাঁপা একটি সাধারন সমস্যা। পেট ফাপলে সাধারণত দেখা যায় পেট ফুলে যায় , প্রস্রাব আটকে যায়, হালকা বায়ু ছাড়াও আরো বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়। এমত অবস্থায় যদি আপনি আধা চামচ পাথরকুচির পাতার রস অল্প পরিমাণে চিনির সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে সামান্য পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে খেলে এ সকল সমস্যা আস্তে আস্তে দূর হবে।

ত্বকের যত্নেঃ পাথরকুচি পাতায় থাকে প্রচুর পরিমাণে পানি। তাই পাথরকুচির পাতা আপনার ত্বকের যত্নে হতে পারে একটি অনন্য উপাদান। এছাড়াও পাথরকুচির পাতা আপনার ত্বকের ব্রণ ,ছোট ছোট ফোড়া থাকলে আপনি পাথরকুচির পাতা বেটে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি পাথর কুচির পাতা ব্যবহার করেন তাহলে আপনি শুধু ব্রণ ও ফোড়া ছাড়াও আপনি আপনার ত্বকের জ্বালাপোড়ার সমস্যা থেকেও নিস্তার পেতে পারেন।

মেহ রোগেঃ আপনি হয়তো ভাবছেন মেয়ে হওয়া আবার কি? ঠান্ডা সর্দির কারণে অনেক সময় দেখা যায় শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোড়া হয় এবং প্রচুর পরিমাণ ব্যথা হয় এই অবস্থাকেই বলা হয় মেহ। এই অবস্থায় আপনি যদি পাথরকুচির পাতার রস এক সপ্তাহ ধরে সকালে ও বিকেলে 1 চামচ করে খান তাহলে আপনি অনেক উপকার পাবেন।

মৃগী রোগেঃ মৃগী রোগের মহা ঔষধ বলা যেতে পারে পাথরকুচি পাতাকে। মৃগী রোগ উপস্থিত হলে তাৎক্ষণিক ৮-১০ ফোটা পাথরকুচির পাতার রস রোগীকে খাওয়ালে এটি পেটে যাওয়ার সাথে সাথে রোগী উপকার পাবেন।

কাটা-ছেড়াইঃ পাথরকুচির পাথায় রয়েছে astringgon property, যেটি কাটা কিংবা ছেড়া জায়গায় থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে সহায়তা করে। এতে আরো রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি, এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি যেগুলো আপনার ওই কাটা বা ছিঁড়া জায়গায় ইনফেকশন বা ইনফর্মেশন হতে দেয় না।
এছাড়াও এটিতে Hemostatic Property রয়েছে যেটি ক্ষতস্থানে রক্তের প্রবাহকে কম করে দেয়। ফলে খুব দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। পাথরকুচিতে আরো অন্যান্য অসতিগুণ থাকার কারণে উক্ত ক্ষতস্থানে পরবর্তীতে কোন ইনফেকশন বা ইনফর্মেশন হয় না।

ডায়রিয়া বা আমাশয় রোগেঃ ডায়রিয়া বা আমশায় পাথরকুচির পাতা খুবই উপকারী জিনিস। সাধারণত ডায়রিয়া বা আমাশয় রোগটি ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের আক্রমণ এর কারণে হয়ে থাকে। পাথরকুচি পাতা মতে প্রচুর পরিমাণে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল প্রপার্টি যেটি আমাদের ঘাটের মধ্যকার ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস মেরে ফেলতে সহায়তা করে।

পাথরকুচি পাতার মধ্যকার ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি ঐ সকল জায়গায় ইনফেকশন কম করতে সহায়তা করে এবং এই আমাশয় বা ডায়রিয়া সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আপনি যদি দেখেন আপনার পায়খানার সাথে রক্ত আসছে সেক্ষেত্রে এক চামচ পাথরকুচি পাতার সাথে চার থেকে পাঁচ ফোটা ঘি এবং এক চিমটা জিরার গুড়া মিশিয়ে সারা দিনে দুই থেকে তিনবার খেলে দেখতে পাবেন।
যে আপনার পায়খানার সাথে যে রক্তপাত হচ্ছিল সেটা ধীরে ধীরে কমে যাবে। এছাড়া আপনি যদি দেখেন যে আপনার নরমাল ডায়রিয়া বা আমাশয় হয়েছে সেক্ষেত্রে আপনি দুই চামচ পাথরকুচির পাতার রসের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ বধু মিশিয়ে সারা দিনে দুই থেকে তিনবার প্রথম দিন খেলে দ্বিতীয় দিন তার ফলাফল পাবেন।

মাথা ব্যথায়ঃ মাথা ব্যথায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে পাথরকুচি পাতা। আপনি যদি মাথা ব্যথায় ভুগে থাকেন তাহলে পাথরকুচির পাতা বেটে কপালে হালকা হলে লাগিয়ে দিলে ৫ থেকে ৭ মিনিটের মধ্যে আপনার মাথা ব্যথা কমে যাবে। এছাড়াও এনজাইটিস বা ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রেও পাথরকুচির পাতা বেটে কপালে প্রলেপ দিলে ভালো ফলাফল পাবেন।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পাথরকুচির পাতা উপকারিতা অতুলনীয়। পাথরকুচির পাতা খাওয়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরের নাইট্রিক অক্সাইড বাড়িয়ে দেয় । এই নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের শরীরের ব্লাড সার্কুলেশনের জন্য যে সমস্ত ব্লাড ভেজগুলি বা আল্টারি রয়েছে সেগুলোকে প্রসারিত করে দেয়।
তখন ব্লাড সার্কুলেশনের কোন বাধার সৃষ্টি হয় না এবং আমাদের ব্লাড প্রেসারও থাকে নিয়ন্ত্রণ । সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে দুই থেকে তিনটি পাতা খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান। কিছুদিন খেলেই কিন্তু আপনার ব্লাড প্রেসার এর তারতম্য অবশ্যই বুঝতে পারবেন।

আর্থ্রাইটিস প্রবলেমঃ আর্থ্রাইটিসের কারণে যদি আপনার জয়েন্টে ব্যথা পেয়েছেন বা শরীরের কোন জায়গাতে কোন মাসেলে আপনার ইনফ্লামেশন হয়েছে কোন মাসলে চোট লেগেছে সে ক্ষেত্রে কিন্তু এই পাথরকুচির পাতা আপনাকে উপকারিতা দিতে পারে। তার কারণ আমরা আগেই আলোচনা করেছি পাথরকুচি পাতার মধ্যে রয়েছে আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি এবং পাথরকুচি পাতার মধ্যে রয়েছে।

কিন্তু প্রচুর পরিমাণ এনালজেসিক প্রপার্টি বা পেন রিলিভিং এজেন্ট যেগুলি সহজেই আপনার ঐ সমস্ত ব্যথা বেদনাকে কম করতে সাহায্য করে। সেই ক্ষেত্রে পরিমাণ পাথরকুচির পাতাকে নিয়ে মিক্সার গ্রাইন্ডারের মাধ্যমে একটি পেস্ট বানিয়ে নেন। তারপর সেই পেস্ট এর মধ্যে অল্প বেশি পরিমাণ নুন এবং সামান্য কয়েক টুকরো তেঁতুল দিয়ে খুব ভালোভাবে গরম করুন। অসম-প্রসঙ্গ গরম অবস্থাতে যদি আপনার ব্যথা স্থানে লাগাতে পারেন খুব চমকপ্রদ উপকারিতা আপনি পাবেন ।

ডায়াবেটিস রোগীঃ পাথরকুচির পাতার মধ্যে রয়েছে ফিনাইল অ্যালকাইন ইথার নামক বিশেষ এক ধরনের মেডিসিনাল কম্পাউন্ড। যে মেডিসিনাল কম্পাউন্ড আমাদের শরীরে ইনসুলিনের সিক্রেশনকে বাড়িয়ে দেয় এবং তার সাথে সাথে টাইপ টু ডায়াবেটিক পেশেন্টদের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এর সমস্যারও কিন্তু সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে।
তাই যদি আপনি একজন টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিক পেশেন্ট হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রেও আপনি পাথরকুচির পাতা ব্যবহার করতে পারেন। আর না হলে যদি আপনি টাইপ টু ডায়াবেটিক পেশেন্ট হয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রেও কিন্তু আপনি পাথরকুচি পাতা ব্যবহার করতে পারেন ।এক্ষেত্রে সকাল বেলা খালি পেটে দুই থেকে তিনটি পাতা খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে চিবিয়ে খান।

জন্ডিস বা লিভার সমস্যায়ঃ লিভারের যেকোনো প্রকার সমস্যার কিন্তু পাথরকুচি পাতা সমাধান করতে পারে লিভারের সমস্যা বলতে আপনার জন্ডিসের সমস্যা হতে পারে আপনার হেপাটাইটিস হতে পারে আপনার হেপাটো ম্যাগালি হতে পারে আপনার অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হতে পারে অর্থাৎ মধ্য পানের জন্য লিভারে যদি ফ্যাট ডিপজেশন হয় ।এছাড়া যদি আপনার নন অ্যালকোহল ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হয়ে থাকে।

সে ক্ষেত্রে উপকারিতা দিতে পারে আপনার যদি লিভার সিরোসিস স্টার্ট হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রেও যদি আপনি পাথরকুচির পাতা ব্যবহার করতে পারেন আপনি কিন্তু অবশ্যই উপকারিতা পেতে পারেন এছাড়া লিভার ক্যান্সার পেসেন্টরা পর্যন্ত এই পাথরকুচি পাতা ব্যবহার করতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে ২০মিলি পরিমাণ পাথরকুচি পাতার রস এক গ্লাস কুসুম গরম জলের সাথে মিশিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে সকাল বেলা খালি পেটে পান করুন।

চুলের খুশকিতেঃ চুলের গোড়ার খুশকির জন্য পাথরকুচির পাতা ব্যবহার করে দেখতে পারেন দেখুন । গোসল করার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগে পাথরকুচি পাতার বেস্টকে খুব ভালোভাবে আপনার মাথায় লাগিয়ে নিন এবং ১৬-২০ মিনিট পরে খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিন বা স্নান করে নেন । আর না হলে নারকেল তেলের মধ্যে কিছু পরিমাণ পাথরকুচি পাতা দিয়ে খুব ভালোভাবে গরম করুন তারপর সে তেলটিকে ছেঁকে রেখে দেন । প্রতিদিন বিছানায় শুতে যাওয়ার আগে সেই তেল আপনার মাথায় খুব ভালোভাবে মাসাজ করুন।

সর্দি-কাশিতেঃ সর্দি-কাশিতে খুবই উপকারী পাথরকুচির পাতা। আপনি যদি র সর্দিতে ভুগে থাকেন তাহলে পাথরকুচি পাতা হতে পারে আপনার জন্য একটি সহজ সমাধান। আপনাকে প্রথমে পাথরকুচিরপাতা রস করে কিছুটা গরম করতে হবে তারপর সেই গরম পাথরকুচির পাতার রসের সাথে সামান্য পরিমাণ সোহাগার খৈ মেশাতে হবে। দুই থেকে তিন চা চামচ এর সাথে যেন ২৫০ মিলি হয়। এবার আপনি প্রতিদিন সকালে বিকেলে দুই চা চামচ করে সেবন করলে আপনি অতি দ্রুত সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পাবেন।

শিশুদের পেট ব্যথায়ঃ আপনি যদি নিশ্চিত হন যে আপনার শিশুর পেটে ব্যথা হচ্ছে তাহলে আপনি পাথর কুচির পাতার রস নিয়ে পেটে মালিশ করলে ব্যথা উপশম হবে।তার কারণ আমরা আগেই আলোচনা করেছি পাথরকুচি পাতার মধ্যে রয়েছে আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি এবং পাথরকুচি পাতার মধ্যে রয়েছে কিন্তু প্রচুর পরিমাণ এনালজেসিক প্রপার্টি বা পেন রিলিভিং এজেন্ট যেগুলি সহজেই আপনার ঐ সমস্ত ব্যথা বেদনাকে কম করতে সাহায্য করে।

পাইলস রোগেঃ পায়ুপথের একটি যন্ত্রণাদায়ক রোগের নাম হচ্ছে পাইলস পাইলস। পাইলসের যত ধরনের ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো পাথরকুচির পাতা ট্রিটমেন্ট। আপনি যদি পাথরকুচির পাতার রসের সঙ্গে গোলমরিচ মিশিয়ে পান করেন তাহলে আপনি পাইলস বা অশ্ব রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

রক্ত পিত্তেঃ আপনি যদি পিত্ত জনিত ব্যথায় ভোগে থাকেন এবং ব্যথায় রক্তপাত হয় তাহলে সকালে ও বিকেলে দুইবেলা পাথরকুচির পাতার রস খেলে এ সমস্যা থেকে আগুনে মুক্তি পেতে পারেন।

বিষাক্ত পোকার কামড়েঃ আপনাকে যদি কোন বিষাক্ত পোকামাকড় কামড়ায়। যেমন ভোমরা ,বিচ্ছু, মৌমাছি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পোকামাকড় কামড়ালে আপনি উক্ত স্থানে পাথরকুচির পাতা রস গরম করে সেখানে লাগালে বা শেখ দিলে দ্রুত ব্যথা সেরে যায়।

শরীর জ্বালা পোড়াইঃ অনেক সময় দেখা যায় হঠাৎ শরীর জ্বালাপোড়া করে অস্থির অস্থির ভাব লাগে। এমন একটা সমস্যায় আপনি যদি ২ চামচ পাথরকুচির পাতার রস আধা কাপ হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে পান করেন তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক

পাথরকুচি পাতা উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। তবে প্রতিটি জিনিস সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে আমরা যেন যেমন উপকৃত হই। ঠিক তেমনি প্রতি ব্যাপারে হাজারো উপকারিতার মাঝে কিছু খারাপ দিক দেখা দেয়। পাথরকুচি পাতার ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। তাদের চলুন জেনে নেই পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকারক সম্পর্কে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে পাথরকুচি পাতা খেলে পাকস্থলীতে যদি পূর্বের কোন সমস্যার থেকে থাকে। তবে অতিরিক্ত পাথরকুচির পাতা সেবনের ফলে এটা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
  • গর্ভ অবস্থায় কখনোই পাথর ক্ষতির পাতা খাওয়া ঠিক নয়। কেননা এতে মা ও শিশুর উভয়ের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
  • আপনি যদি এলার্জির সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং আপনার শরীরে এলার্জির লেভেল বেশি থাকে সেক্ষেত্রে আপনি পাথরকুচির পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন। কারণ নিয়মিত পাথরকুচি পাতার সে বলে আপনার এই এলার্জির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • পাথরকুচির পাতা সাধারণত তিতা ধরনের হয়ে থাকে। তাই পাথরকুচির পাতা সেবনের ফলে আপনার মুখের স্বাদ চলে যেতে পারে।
  • আপনি যদি নিয়মিত অতিরিক্ত মাত্রায় বাঁচার পাতা সেবন করতে থাকেন তাহলে আপনার ডায়রিয়া বা আমোশয়ের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • পাথরকুচির পাতা আপনি অবশ্যই সর্বোচ্চ এক টনে এক সপ্তার বেশি খেতে পারবেন না। আবার যদি খেতে চান মাঝখানে এক সপ্তাহ বাদ দিয়ে পরবর্তীতে আবার এক সপ্তাহ খাবেন। নইলে আপনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।

খালি পেটে পাথরকুচি পাতা খেলে কি হয়

কুচির পাতা কিডনি বা গোলব্লাডারের পাথর অপসারণ করতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। তাই আপনি যদি কিডনি বা গোলব্লাডারে পাথরের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে প্রতিদিন সকালে পাথরকুচি পাতা খেলে আপনার কিডনি বা গোল ব্লাডারের পাথর ধীরে ধীরে অবসর নিতে হবে।

বর্তমান সময়ে উচ্চ রক্তচাপ একটি জটিল সমস্যা। এ সমস্যায় আপনি যদি প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে দুই থেকে তিনটি পাথরকুচির পাতা খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান। কিছুদিন খেলেই কিন্তু আপনার ব্লাড প্রেসার এর তারতম্য অবশ্যই বুঝতে পারবেন।

আপনি টাইপ টু ডায়াবেটিক পেশেন্ট হয়ে থাকেন সেই ক্ষেত্রেও কিন্তু আপনি পাথরকুচি পাতা ব্যবহার করতে পারেন ।এক্ষেত্রে সকাল বেলা খালি পেটে দুই থেকে তিনটি পাতা খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে চিবিয়ে খান।

আপনার যদি লিভার সিরোসিস স্টার্ট হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রেও যদি আপনি পাথরকুচির পাতা ব্যবহার করতে পারেন আপনি কিন্তু অবশ্যই উপকারিতা পেতে পারেন এছাড়া লিভার ক্যান্সার পেসেন্টরা পর্যন্ত এই পাথরকুচি পাতা ব্যবহার করতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে ২০মিলি পরিমাণ পাথরকুচি পাতার রস এক গ্লাস কুসুম গরম জলের সাথে মিশিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে সকাল বেলা খালি পেটে পান করুন।

পাথরকুচি পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম

খুব সমস্যার সাথে সাথে ব্যবহার বিধি গুলি আমি খুব সহজে আপনাদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে যে একটানা দুই সপ্তাহের বেশি পাথরকুচি পাতা খাবেন না ওই সপ্তাহ পরে এক সপ্তাহের একটা গ্যাপ দেবেন তারপর আবার দুই সপ্তাহ খাবেন এখন আমরা আলোচনা করব পাথরকুচি পাতা কাদের খাওয়া উচিত নয় ।

সর্বপ্রথম যদি আপনার হার্টের কোন প্রকারের কোন সমস্যা রয়েছে সেক্ষেত্রে পাথরকুচির পাতা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করবেন গর্ভবতী মায়েদের পাথরকুচি পাতা খাওয়া উচিত নয় এবং 12 বছরের থেকে নিচে যে সমস্ত শিশুরা রয়েছে সেই সমস্ত শিশুরাও পাথরকুচির পাতা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।

শেষ কথাঃ পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক

পাথরকুচি পাতার ক্ষতিকর দিক নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে পাথরকুচি উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আরো জানতে পেরেছেন খালি পেটে পাথরকুচির পাতা খেলে কি হয় এ বিষয়ে। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার নিকষ্ট বন্ধুদের নিকট শেয়ার করুন। এবং শেষে আপনার মূল্যবান মতামত দিতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url