স্যালাইন খাওয়ার ১৩টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
রসুন খেলে কি বীর্য ঘন হয় - সেক্সে রসুনের উপকারিতাআপনি হয়তো স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু সঠিক তথ্যটি এখনো আপনি খুঁজে পাননি। আপনি যদি আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকেন মনোযোগ সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়েন।
তাহলে আপনি স্যালাইন কার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আপনি আরো জানতে পারবেন। কিভাবে স্যালাইন তৈরি করতে হয়, স্যালাইন খাবার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা, এছাড়াও ব্লাড প্রেসার বাড়াতে স্যালাইনের ভূমিকা সহ আরো বেশ কিছু বিষয়। তাহলে চলুন আমরা শুরু করি।
ওরস্যালাইন-এন এর উপাদান
আমরা যেহেতু এখানে স্যালাইন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব । তাহলে প্রথমে চলুন জানি ওরস্যালাইন-এন এ কোন উপাদান কি পরিমানে রয়েছে।
ওরস্যালাইন-এন এর উপাদানের নাম পরিমান
- সোডিয়াম ক্লোরাইড বিপি ১.৩০গ্রাম
- পটাশিয়াম ক্লোরাইড বিপি ০.৭৫গ্রাম
- ট্রাইসোডিয়াম সাইট্রেট ডাইহাইড্রেট বিপি ১.৪৫গ্রাম
- এনহাইড্রাস গ্লুকোজ বিপি ৬.৭৫গ্রাম
স্যালাইন তৈরির নিয়ম
আমরা সাধারণত ডায়রিয়া বা যেকোনো ধরনের পাতলা পায়খানার জনিত পানি শূন্য তার সহ যেকোনো ধরনের পানির শূন্যতায় স্যালাইন খেয়ে থাকি। স্যালাইন তৈরি করার নিয়মটা জেনে নিই।
এক প্যাকেট স্যালাইন তৈরি করার নিয়ম
- এক প্যাকেট স্যালাইন তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটা পরিষ্কার পাত্রে দুই পোয়া বা ৫০০ এমএল বিশুদ্ধ খাবার পানি নিতে হবে।
- এবার আপনি প্যাকেটের সম্পূর্ণ স্যালাইনটি পানির মধ্যে ঢেলে দিন।
- এবার একটা পরিষ্কার চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে স্যালাইন গুলো মিশিয়ে নিন।
বাসায় স্যালাইন তৈরি করার নিয়ম
আপনার কাছে যদি খাবার স্যালাইন না থাকে তবে আপনি নিজেই খাবার স্যালাইন তৈরি করতে পারবেন। স্যালাইন তৈরি করার জন্য আমরা প্রয়োজন হবে চিনি বা আখের গুড় ও লবণ। তাহলে চলুন জেনে নেই আমরা কিভাবে খাবার স্যালাইন না থাকিলে চিনি বা আখের গুড় ও লবণ দিয়ে স্যালাইন তৈরি করব।
- প্রথমে আপনাকে একটা পরিষ্কার পাত্রে দুই পোয়া বা 500ml বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে।
- এবার আপনি এক টেবিল চামচ চিনি বা এক মুষ্টি আগের গুণ এবং এবং তিন আঙ্গুলের এক চিমটা লবণ নিন।
- এবার একটি পরিষ্কার চামচ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
ব্যাস তৈরি হয়ে গেল আপনার খাবার স্যালাইন।
ওরস্যালাইন খাওয়ার নিয়ম
স্যালাইন আমাদের জন্য একটি উপকারী জিনিস। বিশেষ করে ডায়রিয়া এবং যেকোনো ধরনের পায়খানার জনিত পানিশূন্যতা ছাড়াও অন্যান্য পানি শূন্যতার ক্ষেত্রে স্যালাইন এর কোন বিকল্প নেই। স্যালাইন আপনার শরীরের পানির শূন্যতা করতে সহায়তা করে থাকে।
আরোও পড়ুনঃ মধু দিয়ে রূপচর্চা ও মধুর উপকারিতা অপকারিতা।
স্যালাইন পানি শূন্যতা দূর করে থাকে বলেই যে আমরা কোন নিয়ম না মেনে যে খাব সেটা ঠিক নয়। স্যালাইন খাওয়ার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেই খাবার স্যালাইন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।
- খাবার স্যালাইন তৈরি করার সময় হতে আপনি ১২ ঘন্টা পর্যন্ত খেতে পারবেন। এবং বাসায় তৈরি করা স্যালাইন 6 ঘন্টা পর্যন্ত খেতে পারবেন।
- বয়স দুই বছরের কম হলেঃ রোগীর বয়স যদি দুই বছরের কম হয় সেক্ষেত্রে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ৫০ থেকে ১০০ মিলি স্যালাইন মিশানো পানি খেতে হবে
- বয়স দুই থেকে দশ বছর হলেঃ রোগীর বয়স যদি দুই বছরের উপরে এবং ১০ বছরের নিচে হয় সেক্ষেত্রে পানি শূন্যতা পূরণ করার জন্য ১২৫- ২৫০ এমএল স্যালাইন মিশানো পানি খেতে হবে।
- বয়স ১০ বছরের বেশি হলেঃ রোগীর বয়স যদি ১০ বছরে বেশি হয় সে ক্ষেত্রে পান শূন্যতা পূরণের জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ এম এবং পরিমাণ স্যালাইন মিশানো পানি খেতে হবে।
স্যালাইন খাওয়ার ১০টি উপকারিতা
১. পানি শূন্যতায়ঃ যেকোনো ধরনের পানিশূন্যতায় স্যালাইন অতুলনীয়। তাই আপনি যদি যেকোনো ধরনের পানিশূন্যতায় ভুগে থাকেন তাহলে অবশ্যই স্যালাইন খাবেন।
২. তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়ঃ আপনি যদি পরিশ্রমের কারণে দুর্বলতা অনুভব করেন সে ক্ষেত্রে স্যালাইন খেলে আপনি দ্রুত শরীরে শক্তি পাবেন।
৩. লাবনের ঘাটতি পূরণঃ আপনার শরীরে যদি লবণের ঘাটতি থেকে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই স্যালাইন খেতে ভুলবেন না।
৪. মাথা ব্যথা দূরীকরণঃ আপনি যদি মাথা ব্যথায় ভেবে থাকেন তাহলে আপনি স্যালাইন খেতে পারেন। কারণ স্যালাইন মাথা ব্যথা দূরীকরণে সহায়দা করে থাকেন।
৫. রক্ত চাপ বৃদ্ধি করেঃ আপনার রক্ত চাপ যদি কম থাকে । তাহলে আপনি আপনার রক্ত চাপ বৃদ্ধি করতে স্যালাইন খেতে পারেন। কারণ স্যালাইন খুব দ্রুত রক্ত চাপ বৃদ্ধি কর।
৬. পরিপাক নালী পরিস্কার করেঃ নিয়মিত সঠিক নিয়মে স্যালাইন খেলে আপনার পরিপাক নালী পরিস্কার থাকা।
৭. জিং সাপ্লিমেন্ট হিসেবেঃ পাতলা পায়খানা বা ডায়রার ক্ষেত্রে স্যালাইন সাপ্লিমেন্ট এর সাথে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. ডিহাইড্রেশন দূর করেঃ আপনি যদি ডিহাইড্রেট হয়ে থাকেন তাহলে এটি খেলে আপনার দুই হাইড্রেশন থেকে মুক্তি পাবেন।
৯. ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণেঃ আপনার শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণে স্যালাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১০. গরমে শরীর ঠান্ডা করেঃ গরমের সময় আপনি যদি নিয়মিত সঠিক পথ চাই খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে থাকেন।
১১.ঘাড়ের ব্যথা দূরীকরণঃ আপনার ব্লাড প্রেসার যদি লো হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার ঘাড়ের রোগটি টানটান ভাব অনুভূতি হয় এবং ব্যথা। এ ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্ত পেতে স্যালাইন খেতে পারে না।
১২. চর্মরোগ নিরাময়ঃ চর্মরোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে স্যালাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৩. ব্লাড সার্কুলেশনঃ ব্লাড সার্কুলেশন এর ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত সকালে একটি এবং রাত্রিতে একটি স্যালাইন খান তাহলে আপনার ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি পাবে।
স্যালাইন খাওয়ার অপকারিতা
প্রতিটি জিনিসের যে উপকারিতা হয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতা হয়েছে রয়েছে। স্যালাইন এর ক্ষেত্রেও এই নিয়মটি প্রযোজ্য। কারণ সঠিক নিয়মে সঠিক পরিমাণে স্যালাইন খেলে যেমন আমাদের উপকার হয় ঠিক তেমনি অতিরিক্ত পরিমাণে স্যালাইন খেলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। চলুন জেনে নেই স্যালাইন খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
কিডনি প্রবলেমঃ আমাদের শরীরে একটি অতি প্রয়োজনীয় অংগ। প্রতিদিন অতিরিক্ত মাত্রায় স্যালাইন খেলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের উচিত সঠিক পরিমাণে স্যালাইন খাওয়া।
কোষের পানি শূন্যতাঃ ডায়রিয়া কিংবা পাতলা পায়খানা ক্ষেত্রে পানিশূন্যতা পূরণে স্যালাইনের গুরুত্ব অতুলনীয়। অন্যদিকে আবার যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে এটি খান সেক্ষেত্রে আপনার শরীরের কোষের পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই স্যালাইন খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক পরিমাণে খাবেন।
হাইপারন্যাট্রেমিয়াঃ প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড থাকে। তাই খাবার স্যালাইন অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এর মধ্যকার ক্ষুদিরাম হাইড রক্তে মিশে ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে। আর ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা হলে হাই ব্লাড প্রেসারে সমস্যা হতে পারে।
লবণের পরিমাণ বৃদ্ধঃ স্যালাইনের প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড থাকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে আপনার শরীরে লবণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণে এটি খাবেন।
স্যালাইন খেলে কি প্রেসার বাড়ে
আপনি যদি অতিরিক্ত পরিশ্রম করার পর শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করেন। এবং পেশার চেক করার পর যদি আপনি দেখেন যে আপনার প্রেসার কম আছে। এছাড়াও হঠাৎ করে যদি আপনি দেখেন আপনার ঘরের রং টেনে ধরেছে এবং ব্যথা করছে। এমত অবস্থায় আপনি আপনার ব্লাড প্রেসার চেক করা। যদি দেখেন আপনার ব্লাড প্রেসার কম আছে।
আরোও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় 15টি ফল ও সবজি
সেক্ষেত্রে আপনি একটা খাবার স্যালাইন সঠিক নিয়ম তৈরি করে খেয়ে নিন। দেখবেন মুহুর্তের মধ্যে আপনি অনেকটা আরম্ভ করছেন। আপনার ব্লাড প্রেসার যদি কম হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে দেখবেন আপনার প্রেসার কিছুটা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি স্বস্তি বোধ করবেন। সহজ কথায় বলতে গেলে বলা যায় যে স্যালাইন আপনার প্রেসার বাড়াতে সহায়তা করে থাকেন।
গর্ভাবস্থায় স্যালাইন খাওয়ার
স্যালাইন খাওয়ার যেহেতু অনেক গুলো উপকারি দিক রয়েছে । তাই গর্ভাবস্থা নিঃসন্দেহে এটি খেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় এটি খাওয়া যাবে বলে অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না। গর্ভ অবস্থায় যদি কেউ অসুস্থ থাকে শারীরিক দুর্বলতা, ডায়রিয়া, জ্বর বমি হওয়া, পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে তাহলে আপনি স্যালাইন খেতে পারবেন।
শরীর ক্লান্তি ভাব ও পানি শূন্যতা দূরীকরণে স্যালাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই একজন গর্ভবতী মহিলা নিঃসন্দেহে সঠিক পরিমাণে স্যালাইন খেতে পারবেন। গর্ভাবস্থায় স্যালাইনের পাশাপাশি ডাবের পানিও খেতে পারবেন।
শেষ কথাঃস্যালাইন খাওয়ার ১৩টি উপকারিতা ও অপকারিতা।
স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে লিখিত আর্টিকেল টিতে আমরা আপনাদের স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এছাড়া আমরা আরো আলোচনা করার চেষ্টা করেছি তৈরি করার সঠিক নিয়ম ও সঠিক মাত্রা ,গর্ভ অবস্থায় স্যালাইন খাওয়ার উপকারিতা কি ব্লাড প্রেসার বাড়াতে সহযোগিতা করে কিনা এ বিষয়েও আমরা আলোচনা করেছি।
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছে। আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুদের নিকট শেয়ার করতে ভুলবেন না । ধন্যবাদ।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url