কোলেস্টেরল কম করতে যে ডায়েট চার্ট
প্রাকৃতিক উপায়ে রক্তে কোলেস্টেরল কমাবেন যে উপায়েআসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন। আপনা কি কোলেস্টরলের সমস্যায়
ভুগছেন। এমত অবস্থায় আপনি কোলেস্টেরল কম করতে যে ডায়েট চার্ট ফলো করবেন সেই
বিষয়ে অনুসন্ধান করেও আছেন না।
আপনার হাতে যদি মূল্যবান কিছু সময় থাকে তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়া শুরু
করুন এবং শেষ পর্যন্ত থাকুন আশা করি আপনি আপনার কোলেস্টেরল কম করতে যে ডায়েট
চার্ট ফলো করবেন সে সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন শুরু করা
যাক।
ভূমিকা
যদি দেখেন আপনার রক্তে কোলেস্টোলের মাত্রা বেড়ে গেছে। তাহলে সর্বপ্রথম আপনাকে যে
কাজটি করতে হবে, আপনার ডায়েট চার্টকে মডিফিকেশন করতে হবে। যখনই দেখি রক্তে
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেছে সাথে সাথে আমরা যে কাজটি করি সেটা হলো সমস্ত
রকমের তেল মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিই। মাছ, মাংস, ডিম এ সমস্ত আমরা
খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিই।
তার ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই একঘেয়ে এবং বিস্বাদ খাবার খেতে খেতে আমরা যখন আমরা যখন
হাঁপিয়ে উঠি ।তখন আবার আগের ফুড হেভিডস ফিরে যাই। তাই যদি আমরা সঠিক ডায়েট
চার্ট মেন্টেন করতে পারি বা যদি আমরা এমন কিছু খাবার খেতে পারি যে সমস্ত
খাবারগুলি আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাতো বৃদ্ধি করেই না উপরন্তু আপনার রক্ত
থেকে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারএড এর মাত্রা কম করতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল কী
কোলেস্টেরল হলো এক ধরনের চর্বি জাতীয় তৈলাক্ত স্টেরয়েড যাহা কোষের ঝিল্লি বা
সেল মেমব্রেনে পাওয়া যায়িএবং সকল প্রাণীর রক্তে প্রবাহিত হয়। সাধারণত
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেনের এটি একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। এটি
সাধারণত মেমব্রেনের মধ্য দিয়েতরল পদার্থের ভেদ্যতা সচল রাখে ও তারল্য বজায়
রাখে।এছাড়াও কোলেস্টেরল একটি জরুরী প্রিকার্সার মলিকিউল যা বাইল এসিড, স্টেরয়েড
হরমোন এবং স্নেহ জাতীয় পদার্থ দ্রাব্য ভিটামিনের জৈব সংশ্লেষণ ঘটায়। কোলেস্টরেল
সবচেয়ে জরুরি স্টেরলযা প্রাণীদেহে সংশ্লেষিত হয়।
কোলেস্টেরলের ধরন
কোলেস্টেরল দুই ধরনের। (১)এইচডি এল ও (২) এলডিএল।
এইচডিএল বা হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন অর্থাৎ বেশি ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন, যেটি
শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এই কোলেস্টেরল সাধারণত আমাদের ঝিল্লির তারল্য বজায়
রাখে এবং পিত্ত রস তৈরি করতে সাহায্য করে এছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি
করতেও ভূমিকা রাখ।
এলডিএল বা লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিনবা খারাপ কোলেস্টেরল
যেটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটি সাধারণত রক্তনালীতে জমে রক্তনালীকে সংকুচিত
করে ফেলে। ফলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়। ফলে সৃষ্টি হয় হৃদরোগের মতো জোটের
সমস্যা।
কোলেস্টেরলের মাত্রা
ন্যাশনাল কোলেস্টেরল এডুকেশন প্রোগ্রাম , অ্যাডাল্ট ট্রিটমেন্ট প্যানেল- এর 1987 সালের রিপোর্টে মোট রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা হওয়া উচিত: < 200 mg/dL স্বাভাবিক রক্তের কোলেস্টেরল, 200-239 mg/dL বর্ডারলাইন-হাই, > 240 mg/dL উচ্চ কোলেস্টেরল। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন মোট (রোজা) রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং হৃদরোগের ঝুঁকির জন্য অনুরূপ নির্দেশিকা প্রদান করে: স্ট্যাটিনগুলি এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর এবং কার্ডিওভাসকুলার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় রোগ, সেইসাথে মাধ্যমিক প্রতিরোধে যারা কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মানুষের জন্য গড় বৈশ্বিক গড় মোট কোলেস্টেরল রয়ে গেছে প্রায় 4.6 mmol/L (178 mg/dL) পুরুষ ও মহিলাদের জন্য, অপরিশোধিত এবং বয়স উভয়ই মানসম্মত, 1980 থেকে 2018 পর্যন্ত প্রায় 40 বছর ধরে, কিছু আঞ্চলিক বৈচিত্র এবং পশ্চিমা দেশগুলিতে মোট কোলেস্টেরল হ্রাস।
আরও বর্তমান পরীক্ষার পদ্ধতিগুলি এলডিএল ("খারাপ") এবং এইচডিএল ("ভাল") কোলেস্টেরল আলাদাভাবে নির্ধারণ করে, কোলেস্টেরল বিশ্লেষণকে আরও সংক্ষিপ্ত করার অনুমতি দেয়। কাঙ্খিত LDL মাত্রা 100 mg/dL (2.6 mmol /L) এর কম বলে মনে করা হয় ।
রক্ত পরীক্ষার জন্য রেফারেন্স রেঞ্জ , স্বাভাবিকের পাশাপাশি সর্বোত্তম, HDL, LDL, এবং ভর এবং মোলার ঘনত্বে মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা, ডানদিকে কমলা রঙে পাওয়া যায়, অর্থাৎ সর্বোচ্চ ঘনত্বের সাথে রক্তের উপাদানগুলির মধ্যে।
মোট কোলেস্টেরল HDL, LDL, এবং VLDL এর সমষ্টি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সাধারণত, শুধুমাত্র মোট, HDL, এবং ট্রাইগ্লিসারাইড পরিমাপ করা হয়। খরচের কারণে, ভিএলডিএল সাধারণত ট্রাইগ্লিসারাইডের এক-পঞ্চমাংশ হিসাবে অনুমান করা হয় এবং ফ্রিডওয়াল্ড সূত্র (বা একটি রূপ ) ব্যবহার করে এলডিএল অনুমান করা হয়: আনুমানিক LDL = [মোট কোলেস্টেরল] − [মোট এইচডিএল] − [আনুমানিক ভিএলডিএল]। ট্রাইগ্লিসারাইড 400 mg/dL এর বেশি হলে সরাসরি LDL পরিমাপ ব্যবহার করা হয়। ট্রাইগ্লিসারাইড 400 মিলিগ্রাম/ডিএল-এর উপরে হলে আনুমানিক VLDL এবং LDL-এ আরও ত্রুটি থাকে।
ফ্রেমিংহাম হার্ট স্টাডিতে , প্রতিটি 10 mg/dL (0.6 mmol /L) মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি 30 বছরের সামগ্রিক মৃত্যুহার 5% এবং CVD মৃত্যুর হার 9% বৃদ্ধি করেছে। যদিও 50 বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের সামগ্রিক মৃত্যুহার 11% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রতি 1 মিলিগ্রাম/ডিএল (0.06 mmol /L) বছরে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর হার 14% বৃদ্ধি পেয়েছে মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। গবেষকরা এই ঘটনাটিকে একটি ভিন্ন সম্পর্কের জন্য দায়ী করেছেন।
যার ফলে রোগ নিজেই মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়, সেইসাথে ওজন হ্রাস এবং খাওয়ার অক্ষমতার মতো অসংখ্য কারণের পরিবর্তন করে, যা সিরাম কোলেস্টেরল কমায়। ভোরালবার্গ হেলথ মনিটরিং অ্যান্ড প্রমোশন প্রোগ্রামে সমস্ত বয়সের পুরুষ এবং 50 বছরের বেশি মহিলাদের মধ্যেও এই প্রভাব দেখানো হয়েছে।
186 mg/dL (10.3 mmol /L) এবং কম মোট কোলেস্টেরল খুব কম সহ এই গোষ্ঠীগুলির ক্যান্সার, যকৃতের রোগ এবং মানসিক রোগে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। এই ফলাফলটি ইঙ্গিত করে যে কম কোলেস্টেরলের প্রভাব এমনকি অল্প বয়স্ক উত্তরদাতাদের মধ্যেও দেখা যায়, যা বয়স্ক ব্যক্তিদের সমগোত্রীয়দের মধ্যে পূর্ববর্তী মূল্যায়নের বিপরীতে যে এটি বয়সের সাথে দুর্বলতার জন্য একটি চিহ্নিতকারী।
কোলেস্টেরলের মাত্রা তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া - Wikipedia
হাই কোলেস্টেরলের লক্ষণ
সাধারণত হাই কোলেস্টেরলের তেমন কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না। তবে হালকা কিছু উপসর্গ
দেখা দেয় যেমন ক্লান্তিবোধ, শরীর দুর্বলতা, ঘামা, ক্ষুধা হ্রাসের মত সমস্যা।
এছাড়া আপনার চোখের উপর ও নিচ দিয়ে সাধারণত হলুদ রঙের চর্বি জমা হতে পারে।
এছাড়াও যদি আপনি দেখেন কারো হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং এথোরোস্কেলেরোসিস মতো
পর্যায়ে চলে যায় এবং তখন সে যদি বুকের বাম পাশে ব্যথা অনুভব করে আপনার প্রেশার
বেড়ে যায় অথবা দেখেন যে পায়ে ব্যথা এ ধরনের কোন লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
কোলেস্টেরল কম করতে যে ডায়েট চার্ট ফলো করবে
আজ আমরা তেমনি ১৬ প্রকার খাবারের বিষয়ে জেনে নেব । যে খাবারগুলি যদি আপনারা
খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন । তাহলে আপনার রক্তে তো কোলেস্টেরলের মাত্রা
বৃদ্ধি পাবেই না উপরন্তু আপনার রক্ত থেকে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারেটের মাত্রা
ধীরে ধীরে কমে আসবে । আপনাদের যাতে এই ডায়েট চ্যাট ফলো করতে সুবিধা হয় সে কথা
মাথায় রেখেই আপনাদের ডায়েট চ্যাট আমরা বানিয়েছি।
এই ডায়েট চার্টের মধ্যে রয়েছে, আপনার সবজি, ফল, আপনার মর্নিং ব্রেকফাস্ট,
স্ন্যাক্স, পানীয় সমস্ত প্রকার জিনিস এই খাদ্য তালিকার মধ্যে রয়েছে । শেষ
পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং জেনে নিন এই সমস্ত খাবারগুলি আপনার রক্ত থেকে
কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করার জন্য খাদ্য তালিকায় যুক্ত করবেন কেন?
বৃঞ্জাল বা বেগুন
আমরা প্রথমে খাদ্য তালিকা প্রথমে খাদ্য তালিকায় যে খাবারটি রেখেছি সেটি হল একটি
সবজি ।সেটি হলো বৃঞ্জাল বা বেগুন । বেগুনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে ।
১০০ গ্রাম বেগুনের মধ্যে হাই কোয়ালিটি ফাইবার মোটামুটি তিন থেকে সাড়ে তিন গ্রাম
পর্যন্ত পাওয়া যায়। আপনি যদি আপনার খাদ্য তালিকের মধ্যে ফাইবার বাড়াতে পারেন
তাহলে কিন্তু আপনার রক্তে কোলেস্ট্রল এবং ট্রাই গ্লিসারাইড এর মাত্রা ধীরে ধীরে
কমে আসবে।
এর সাথে সাথে আপনার হার্ট অ্যাটাকের মত সমস্যা আপনার স্ট্রোকের মত সমস্যা
অবেসিটির মত সমস্যা হাইপ্রেসারের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারেন। তাই অবশ্যই
আপনি খাদ্য তালিকাতে কিন্তু বেগুনকে রাখতে পারেন । কিন্তু নিশ্চিত করে নেবেন
বেগুন খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী বলে বেশি বেশি পরিমাণ তেল দিয়ে
বেগুন ভাজা খাবেন না ।সে ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার বিপরীত হয়ে যাবে। আপনি বেগুন
পোড়া খেতে পারেন। বেগুন পোড়া কিন্তু আপনার খুব ভালো একটা অপশন হতে পারে।
ভেন্ডি বা ঢ্যাঁড়স
আমরা দ্বিতীয় যে খাবারটির কথা বলব সেটি হল ভেন্ডি বা ঢ্যাঁড়স। গ্রীষ্মকালের এই
সবজিটি আপনার রক্তে কোলেস্ট্রল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রা কম করতে পারে এমনটাই
দাবি বিজ্ঞানী মহলের মধ্যে। ঢ্যাঁড়সের মধ্যে এক ধরনের পিচ্ছিল বা জেল টাইপের
জিনিস থাকে যেটিকে আমরা বলে থাকি মিউসিলেজ (Mucilage)। আমরা যখন কোন খাবার খায়
সে খাবার ডাইজেস্টের পড়ে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলকে আমাদের শরীরের বাইরে ফ্লাস আউট
করতে সাহায্য করে এই Mucilage। তাই অবশ্যই আপনি আপনার খাদ্য তালিকা তে কিন্তু
ঢ্যাঁড়সকে রাখতে পারেন ।
আপেল
পরবর্তী আমরা যে খাবারটির কথা বলব সেটি হল আপেল। আপেল এমন এক ধরনের ফল যে ফলটি
আপনার রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম করতে সক্ষম। এই নিয়ে
২০১৯ সালে একটি গবেষণা করে হয়, এমন ১০০ জন মানুষকে নির্ধারিত করা হয় যাদের আগের
থেকে রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি আছে ।
সেই সমস্ত মানুষকে প্রতিদিন এক থেকে দুইটি করে আপেল খাওয়ানো হয় । তারপর কিছুদিন
পরে তাদের যখন লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয় সেই টেস্টে রিপোর্টে দেখা যায়
,তাদের রক্ত কোলেস্টেরল এবং টাইগ্লিসারাইডের মাত্রা অনেকটা কমে এসেছে। একটি আপেলে
মোটামুটি তিন থেকে সাত গ্রাম পর্যন্ত হাই কোয়ালিটি ফাইবার পাওয়া যায়।
আরোও পড়ুনঃ পাথরকুচির পাতা সকল রোগের মহৌষধ!
আর আমরা আগেই আলোচনা করেছি আপনার খাবারের যদি ফাইবারের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ধীরে
ধীরে কিন্তু আপনার রক্তে কোলেস্ট্রল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমে আসবে।
এছাড়াও আপেলের মধ্যে আরও এক ধরনের কমপাউন্ড রয়েছে যার নাম হল Polyphenol. এই
Polyphenol আপনার রক্তর কোলেস্টেরল এবং ট্রাই গ্লিসারাইড এর মাত্রাতো কম করেই,
তার সাথে সাথে আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কিন্তু অনেকটা কমিয়ে দেয়।
কালো আঙ্গুর
আমরা আরো একটা ফল কি আমাদের খাদ্য তালিকায় রেখেছি । সেটি খুব জনপ্রিয় একটি ফল।
সেটি হলো কালো আঙ্গুর । কালো আঙ্গুল বা ব্ল্যাক গ্রেপসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আমরা জানি আমাদের শরীরে ডিপোজিট হওয়ার আগে প্রথমে
অক্সিডাইজ হয় তারপর ডিপোজিট হয়। তাই আমাদের খাদ্য তালিকা অবশ্যই
এন্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। আর এই এন্টিঅক্সিডেন্টদের খুব ভালো উৎস
হল কালো আঙুল। তাই কালো আঙ্গুরকে কিন্তু আপনি অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকা যুক্ত
করতে পারেন ।
মাছ
পরবর্তী যে খাবারটি আমরা খাদ্য তালিকায় রেখেছি , সেটি বাঙ্গালীদের খুব জনপ্রিয়
একটি খাবার। সেটি হল মাছ। অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা যেকোনো প্রকারের মাছ কিন্তু
আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন। মাছের মধ্যে Omega 3 Fatty Acid থাকে। যা
এসেনশিয়াল পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসড মনে হয় । এগুলো আপনার ব্লাড পেসেল
গুলোকে প্রোটেক্ট করে রাখে ।
এবং তার সাথে সাথে আপনার রক্তে কোলেস্ট্রল এবং ট্রাইগ্লিসানেডের মাত্রা কম করতে
সাহায্য করে। আর আমাদের ব্লাড ভেসে গুলি যখন প্রটেক্ট থাকে এবং রক্ত যখন
কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের এর মাত্রা কম থাকে অটোমেটিক্যালি অ্যাথ
ক্লোরোসিস এর মত সমস্যার থেকেও কিন্তু আমরা অনেকখানি দূরে থাকতে পারি। তাই অবশ্যই
আপনার খাদ্য তালিকা তে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করে যে কোন প্রকারের মাছ ইনক্লুড
করতে পারেন ।
ওট্স
পরবর্তী আমরা যে খাবারটির কথা বলবো সেটি হলো ওট্স। আজকালকার দিনে ওটমিল খুব
জনপ্রিয় একটি খাবার হয়ে উঠেছে। আপনার ব্রেকফাস্টে না হলে ডিনারে কিন্তু আপনি
অবশ্যই ওটসকে ইনক্লুড করতে পারেন। আমাদের রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের
মাত্রাতো কম করেই তার সাথে সাথে ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের জন্য কিন্তু খুব লাভ দায়ক
মানা হয়।
আরোও পড়ুনঃ স্যালাইন খাওয়ার ১৩টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
এই ওটস নিয়ে ২০১৭ সালে একটি গবেষণা করা হয় এমন ১০০ জন মানুষকে নির্ধারণ করা হয়
যাদের আগের থেকে রক্তে কোলেস্টেরল এবংট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি ছিল। সেই 100
জন মানুষকে প্রত্যেকদিন 70 গ্রাম করে চার সপ্তাহ ওটস খাওয়ানো হয়। চার সপ্তাহ
পরে তাদের যখন লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করা হয় দেখা যায়।
এই ওটস এর মধ্যে যে তিন গ্রাম করে ফাইবার তাদের শরীরে প্রবেশ করেছে সে তিন
গ্রাম করে ফাইবার সেই সমস্ত মানুষদের রক্তে এল ডি এল বা ব্যাড কোলেস্টেরল মাত্রা
11.6% পর্যন্ত কম করেছে। তাই আপনি অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকাতে কিন্তু ওটস কে
সামিল করুন ।
রসুন
কোলেস্টরেল কমানোর ডায়েট চাটে আপনি অবশ্যই রসুনকে রাখতে পারেন। রসুন শুধু মসলা
হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকলেও এর বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এই সকল
উপকারের মধ্যে অন্যতম হলো কোলেস্টেরল কমানো। রসুনে এক ধরনের রয়েছে যেটি আপনার
শরীরের ডেনসিটি লিপোপ্রটিন উৎপাদনকে বাধা দেয়। ফলে আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের
মাত্রা কম করতে সাহায্য করে।
এলিসির নামক একটু উপাদান যেটি এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস এবং
এথেরোস্কলেরোসিস প্রতিরোধ করে। এই মহা উপকারী রসুন থেকে যদি আপনি শতভাগ্য
প্রকারের পেতে চান ,তাহলে কাঁচা অথবা হালকা রান্না করে খেতে পারেন। অ্যাভোকাডোতে
রয়েছে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম।
আপনার হার্ট কে সুস্থ রাখতে এবং আপনার শরীর থেকে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে আপনি
অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকা অ্যাভোকাড রাখতে পারেন।
অ্যাভোকাডো:
অ্যাভোকাডো এমন একটি উপকারী ফল যদি আপনার শরীর থেকে কোলেস্টেরল মাত্রা হ্রাস করতে
সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান।
বাদাম
স্নাক্স এর কথা মাথায় রেখে পরবর্তী যে খাবারটি আমরা খাদ্য তালিকায় রেখেছি সেটি
হল বাদাম। বাদাম হলো গুড ফুডস আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এছাড়া বাদামের মধ্যে প্রচুর
পরিমাণে ফাইবার থাকে যা আপনার রক্তে কোলেস্ট্রল এবং ট্রাইগ্লিসেলাইডের মাত্রা কম
করে এবং তার সাথে সাথে আপনার রক্তে এইচডিএল গুড কলেজ স্টলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে ।
আপনি যে কোন প্রকারের বাদাম খেতে পারেন। আপনি আলমনস খেতে পারেন, আখরোট খেতে পারেন
, আপনি পিস্তা বাদাম খেতে পারেন, আপনি চীনা বাদাম খেতে পারেন, ব্রাজিলিয়ান নাটস
খেতে পারেন, আপনি কাজুবাদাম খেতে পারেন, যে কোন প্রকার বাদাম কিন্তু আপনার হার্ট
হেলথ এর জন্য বিশেষ উপকারী সাবিত হতে পারে।
অলিভ অয়েল
আপনার শরীরে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি আপনার খাদ্য
তালিকা রাখতে অলিভ অয়েলকে রাখতে পারেন। এই অলিভ অয়েল আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের
মাত্রা কমানোর সাথে সাথে আপনার বিপাকীয় রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। অলিভ অয়েল এর
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অক্সিডেন্ট আপনার শরীরের রক্তনালীর
ভেতরের তরুণকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং সেই সাথে সাথে
রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে ।
সয়া প্রোডাক্ট
সয়াবিন বা যেকোনো ধরনের সয়া প্রোডাক্ট আপনার হার্ড হেলথ এর জন্য বিশেষ
উপকারী।আজকাল বাজারে বিভিন্ন প্রকারে সয়া প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। আপনি সয়া মিল
খেতে পারেন , আপনি টোফু খেতে পারেন, আপনি সয়া ইয়োগার্ট খেতে পারেন, আপনি সয়া
বড়ি খেতে পারেন। যেকোনো প্রকারের সয়া প্রোডাক্ট আপনি অবশ্যই আপনার খাদ্য
তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।
এই সোয়া প্রোডাক্ট নিয়ে 2019 সালে একটি গবেষণা করা হয়, সে গবেষনাতে এমন 46 জন
মানুষকে বেছে নেওয়া হয় যাদের আগের থেকে রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের
মাত্রা বেশি ছিল। সেই মানুষগুলোকে দীর্ঘ ছয় সপ্তাহ ধরে প্রত্যেকদিন ২৫ গ্রাম করে
সয়া প্রোটিন খাওয়ানো হয়। ছয় সপ্তাহ পরে যখন তাদের লিপিট প্রোফাইল টেস্ট করা
হয় দেখা গেল তাদের রক্তের এলডিএল বা ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা গড়ে 4.76
মিলিগ্রাম আর ডেসিলিটার কমেছে। তাই অবশ্যই আপনি আপনার খাদ্য তালিকাতে কিন্তু সয়া
প্রোডাক্টটি ইনক্লুড করতে পারেন ।
ডাল
ডালের বিষয়ে আমাদের নতুন করে বলার কিছুই নেই। আপনারা সবাই জানেন ডাল আমাদের
স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী । আপনি যেকোনো প্রকারের ডাল খেতে পারেন। ডালের
মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে, মিনারেল থাকে , আইরন থাকে, খুব হাই
কোয়ালিটির প্রোটিন থাকে। এছাড়া ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আপনার হাই কোয়ালিটি
ফাইবার থাকে।
যা আপনার রক্তে কোলেস্টেরল এবং ট্রাই গ্লিসারাইডের মাত্রা কিন্তু কম করতে সাহায্য
করে । বিজ্ঞানীদের মতামত সারা দিনে অন্তত ৬০ গ্রাম করে ডাল আপনার খাদ্য তালিকায়
করা উচিত। তাতে আপনি রান্না করে খেতে পারেন আপনি অঙ্কুরিত ডাল খেতে পারেন যেভাবেই
খান না কেন। আপনাকে কিন্তু সারা দিনে 60 গ্রাম ডাল অবশ্যই খাদ্য তালিকায় যুক্ত
করতে হবে ।
ডার্ক চকলেট:
ডার্ক চকলেট বেশ কয়েকটি উপায় আপনার শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
ডার্ক চকলেটের ভেতরে পলিফেনল নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যেটি আপনার শরীরে এলডিএল
বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ডার্ক চকলেট আপনার শরীরে
বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যেটি আপনার শরীরের উচ্চ কোলেস্টেরলের
মাত্রার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই আপনি যদি কোন ঔষধ ছাড়া প্রাকৃতিক নিয়মে আপনার
কোলেস্টেরল কমাতে চান আপনি নিজ বিদায় সুগার ফ্রি ডার্ক চকলেট আপনার খাদ্য
তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
গ্রিন টি
গ্রিন টি আপনাদের পানীয়র কথা মাথায় রেখে আমরা খাদ্যতালিকায় রেখেছি গ্রিন টি।
আপনারা সবাই জানেন গ্রিন টি আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে কিন্তু যথেষ্ট উপকারী । এই
গ্রিন টির মধ্যে ক্যাটাসিন বলে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার রক্তের
এইচডিএল বা ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে এবং গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে।
সারাদিনে এক থেকে দুই কাপ গ্রিন টি অবশ্যই খেতে পারে। তবে ম্যাক্সিওর করে নেবেন
গ্রিন টি খাওয়ার সময় কিন্তু কখনোই আপনি কোন মিষ্টি জাতীয় জিনিস ব্যবহার করবেন
না। আর একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন গ্রিন টি কখনই খালি পেটে খাবেন না । গ্রিন টি
খালি পেটে খেলে আপনার স্টোমাক ইউনিটেশনের মতো সমস্যা হতে পারে
নলি ছাড়া দই ও দুগ্ধ জাত খাদ্য:
আপনার যদি উচ্চ কোলেস্টরে ভুগে থাকেন এবং আমরা যদি মনে করেন আপনার কোলেস্টেরল
কমাবেন তাহলে আপনি আপনার খাদ্য তালিকা থেকে ননি যুক্ত দুগ্ধ জাত খাদ্য আপনার
খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন। আবার এটা ভেবে আপনার খাদ্য তালিকা থেকে দুধের তৈরি
খাদ্য খাওয়া বন্ধ করে দিবেন।
আপনার যদি দ্রুতজাত খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন তবে ক্যালসিয়াম এবং মিনারেল এ
ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদান থেকে আপনার শরীর বঞ্চিত হয়। ক্যালসিয়াম এবং মিনারেল
আপনার শরীরে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অঙ্গগুলোকে কর্মক্ষম করতে সাহায্য করে। দুধ বা
দুধ থেকে তৈরি খাদ্য আপনার অস্টিওপোরোসিস বা হার ক্ষয়ের মত সমস্যার ক্ষেত্রে
দারুণভাবে কাজ করে।
তাই আপনাকে অবশ্যই দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে। তবে সেটি অবশ্যই হতে হবে
ননি ছাড়া। আপনি জেনে অবাক হবেন যে ননী ছাড়া দই প্রোটিনের খুবই ভালো একটি উৎস।
এছাড়াও আপনি পাবেন ক্যালসিয়াম ল্যাকটোব্যাসিলাস মাইক্রো অর্গানিজম যেগুলো আপনার
শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি যুক্ত খাবার:
সাধারণত ভিটামিন সি থাকে সকল ধরনের সাইট্রাস ফলে। উদাহরণ হিসেবে লেবু ,কমলা,
গ্রেপফল ইত্যাদি। বেরী জাতীয় ফল যেমন ব্লাকবেরি, স্ট্রবেরি, ক্র্যানবেরী
ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি পেয়ারা এবং আমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি পাবেন।
বাঁধাকপি বা ক্যামিস্ট পরিবারের খাবারের ভিটামিন সি পাবেন। যেমন সবুজ বা চাইনিজ
বাঁধাকপি ,ব্রকলি ইত্যাদি। আরো একটি ভালো উৎস হলো কাঁচা মরিচ। তাহলে বুঝতেই
পারছেন আপনি আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য আগুনে নিয়মিত ভিটামিন
সি যুক্ত এই সকল খাবার খেতে পারেন।
বিটা ক্যারোটিন:
আমরা সাধারণত জানি যে সকল ফল গাড়ো হলুদ হয়ে থাকে সে সকল ফলে বিটা ক্যারোটিন।
যেমন কাঁঠাল, আম ,হলুদ পিস বল ইত্যাদি। এছাড়াও সবজির মধ্যে রয়েছে মিষ্টি আলু,
কুমড়া, কাঠবাদাম, গাজর ইত্যাদির মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ক্যারোটিন রয়েছে। যদি
আপনি হৃদ রোগের মত সমস্যায় ভোগেন এবং আপনার কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি পায় তাহলে আপনি
অবশ্যই নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় বিটা ক্যারোটিন যুতে সকল ফল এবং সবজি যুক্ত
করুন।
লেখকের মন্তব্যঃকোলেস্টেরল কম করতে যে ডায়েট চার্ট
কোলেস্টেরল কম করতে যে ডায়েট চার্ট সম্পর্কে লেখা article যদি আপনার ভালো লাগে
তাহলে আপনার নিকটস্থ বন্ধুদের নিকট শেয়ার করুন। এবং তাদেরকেওকোলেস্টেরল কম করতে
যে ডায়েট চার্ট ফলো করতে হবে সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ করে দিন।
পরিশেষে মন্তব্য করতে ভুলবেন না যেন। কারণ আপনার মন্তব্য আমাদেরকে ভবিষ্যতে আরও
বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে লিখতে অনুপ্রাণিত করে। ধন্যবাদ।
আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url