তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন

সজনে পাতার 13টি অসাধারণ  উপকারিতা এবং খাওয়ার সঠিক নিয়মযখন আমরা ছোট ছিলাম দেখতাম আমাদের জ্বর সর্দি-কাশি এরকম ধরনের সমস্যা হলে মা একটা চামচের মধ্যে কিছু তুলসী পাতার রস এবং মধু মিশিয়ে আমাদের খাইয়ে দিতেন । একটু যখন বড় হলাম তখন দেখলাম আপনার তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন তুলসী মঞ্জুরী অর্থাৎ তুলসী গাছের যে ফুল হয় সেই তুলসীর ফুল, আদা ও গোলমরিচ মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করতেন এবং সে মিশ্রণ আমাদের খাইয়ে দিতেন। 
বেশিরভাগ মায়েরা তার শিশুদের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে এই ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন তুলসী পাতার বিভিন্ন ধরনের টোটকা ব্যবহার করে থাকেন। শুধুমাত্র আপার রেসপেরিটেরি ট্রাকের ইনফেকশন বলেই না তুলসী পাতার এরকম অজস্র ঔষধি গুনাগুন বা উপকারিতা রয়েছে।তুলসী পাতার উপকারিতা নিয়ে হাজার বছর ধরে গবেষকরা গবেষণা চালিয়ে আসছেন এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এই তুলসী পাতার উপকারিতা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং গবেষণালব্ধ যে সমস্ত তথ্য গুলো উঠে আসে সেগুলি বিভিন্ন প্রকার মেডিকেল জার্নালে পাবলিশ করা হয়।

ভূমিকা

ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন তুলসী পাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল Ocimum Sanctum. সারা বিশ্বে প্রায় তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন ১৮ ধরনের তুলসী পাওয়া যায় । কিন্তু বাংলাদেশে এবং ভারতবর্ষে প্রধানত তিন ধরনের তুলসী পাওয়া যায় । একটা রাম তুলসী, যেটির পাতাগুলি হয় সবুজ রঙের হয় । একটি হল কৃষ্ণ তুলসী যার পাতাগুলো আপনার পারপেল বা বেগুনে কালারের হয়। আরেকটি পাওয়া যায় বন তুলসী যেগুলি সাধারণত জঙ্গলে দেখতে পাওয়া যায়।

তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন বা উপকারিতা

আমরা আলোচনা করব তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন নিয়ে আজ আমরা জেনে নেব এমন কিছু তুলসী পাতার উপকারিতা। যে উপকারিতা গুলি বা বলা ভালো যে টোটকা গুলো বেশিরভাগ মানুষই জানেন না এবং তার সাথে সাথে আমরা জেনে নেব এগুলি আপনার শরীরের জন্য এবং তার সাথে সাথে আমরা জেনে নেব এর টোটকা গুলি আপনার শরীরের জন্য লাভ দায়ক কেন তো চলুন আজ আমরা তুলসী পাতা নিয়ে একটি সায়েন্টি ফিক এনালাইসিস করার চেষ্টা করব। এবং প্রত্যেকটি বিষয় আপনার সামনে সহজভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।

সাধারণ জ্বর সর্দি দূর করেন: তুলসী পাতার কি কি উপকারিতা রয়েছে তুলসী পাতার উপকারিতা নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। কিন্তু রেস্পিলিটারি ট্র্যাকে ওই তুলসী পাতার প্রভাব নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব না সেটা হতেই পারে না যদি সাধারণ জ্বর সর্দির মতন আপনার সমস্যা রয়েছে। 
প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে যদি ৮ থেকে ১০ টা তুলসী পাতা খেতে পারেন দেখবেন কয়েক দিনের মধ্যে এই সমস্ত জর সর্দি কাশির মতো সমস্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে এবং তার সাথে সাথে আপনার রেসপিলিটারি সিস্টেমের মধ্যে যে সমস্ত মিউকাস বা কফ জমে থাকে সেগুলিকেও কিন্তু বার করে দিতে সাহায্য করে তুলসী পাতা।

গলায় ব্যথা দূর করেন: সিজন চেঞ্জের সাথে সাথে বা শীতকাল পড়ার সাথে সাথেই গলায় ব্যথা বা গলাতে বিভিন্ন প্রকারের ইনফেকশন যেটিকে আমরা স্বর থ্রট বলে থাকি এটা খুব কমন ব্যাপার এরকম ধরনের সমস্যা হলে 10 থেকে 15 টি তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন পাতা নিয়ে কিছু জলের মধ্যে দিয়ে জলটি পাঁচ থেকে সাত মিনিট পর্যন্ত ফুটিয়ে নেন। তারপর সেই পানি দিয়ে সারাদিনে যদি দুই থেকে তিনবার আপনি গারগেল করতে পারেন দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার স্বর থ্রট মতন সমস্যার সমাধান হয়ে যাচ্ছে।

ব্রংকাইটিস ও পালমোনারি ডিজিস নিরাময় করে: যদি আপনার ব্রংকাইটিস এসতেমা বা সিওপিডি বা ক্রনিক অবস্ট্রাক্টি পালমোনারি ডিজজের মতো সমস্যা রয়েছে এবং সে সমস্যাই আপনি প্রতিনিয়ত কষ্ট পাচ্ছেন তাহলে আপনি তুলসী পাতার রস এবং মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে যদি আপনি এক সপ্তাহ খেতে পারেন । তাহলে দেখবেন এক সপ্তাহ পরের থেকেই অনেক কষ্টের লাঘব হয়ে যাবে এবং আপনি উপকারিতা বুঝতে পারবেন।

ইনফ্লুয়েঞ্জা সমস্যা দূর করে: ইনফ্লুয়েঞ্জের সমস্যা তো কিন্তু ইনস্ট্যান্ট রিলিফ দিতে সক্ষম এই তুলসী পাতা সে ক্ষেত্রে আপনাকে একটা আপনাকে একটা কাজ করতে হবে 8 থেকে 10 টা তুলসী পাতা ১ চিমটি খাদ্য লবণ এবং দুটো লবঙ্গ দিয়ে সারাদিনের যে কোন একটা সময়ে আপনি খান কিছুদিন খেলে আপনি উপকারিতা হাতেনাতে বুঝতে পারবেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: আমাদের ইমিউনিটি পাওয়ার বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার জন্য সিজন চেঞ্জের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রকারের আপনার ঠান্ডা লাগা সর্দি গলায় ব্যথা হাঁচি কাশি জ্বর এ সমস্ত সমস্যা গুলো দেখতে পাওয়া যায় তাই যদি আপনি প্রতিনিয়ত ভাবে এই সমস্ত সমস্যায় ভুগছেন তাহলে আপনি তুলসী পাতার চা বানিয়ে খেতে পারেন। তুলসী পাতার চা কিন্তু আপনার ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে সক্ষম। 
এই তুলসী পাতার চা বানানোর জন্য ১০ থেকে ১৫ টা তুলসী পাতা দুই কাপ জলের সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত ফুটিয়ে নেন যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই দুই কাপ জল কমে এক কাপে পরিণত হয়। তারপর সে জলটিকে ছেঁকে নিয়ে কুসুম কুসুম গরম থাকা অবস্থায় চায়ের মতন চুমুক দিয়ে দিয়ে খান। কিছুদিন যদি আপনি ব্যবহার করতে থাকেন, দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার ইমিউনিটি পাওয়ার বৃদ্ধি পাবে।

রেসপিরেটরি ট্র্যাকের সমস্যা দূর করে: আপনার রেসপিরিটরি ট্র্যাকের এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম তুলসী তার কারণ তুলসীর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি । আন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি বলতে তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন এর মধ্যে রয়েছে Carvocrol এবং Turpene এবং তার সাথে সাথে তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে Rosmarinic Acid মতো আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি। তাই আপনার রেসপেক্টারি ট্র্যাকের যেকোনো প্রকারের ইনফেকশন বা যে কোন প্রকারের সমস্যার জন্য কিন্তু আপনি নিয়মিত ভাবে তুলসী পাতা খেতে পারেন।

কিডনি স্টোন দূর করে: পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে Acetic Acid তাই যদি আপনার কিডনি স্টোন এর মত সমস্যা রয়েছে সেই অ্যাসিটিক অ্যাসিড আপনার কিডনি স্টোন কে ব্রেক ডাউন করতে সাহায্য করে এবং কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন ইউরিন এর সাথে সে কিডনি স্টোন ফ্লাস আউট হয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। তার সাথে সাথে আপনি যদি নিয়মিত ভাবে তুলসী পাতা খেতে পারেন ওই তুলসী পাতা আপনার শরীরে ইউরিক এসিডের লেভেল কম করতে সাহায্য করে ।

আর আপনার শরীরে যখন ইউরিক এসিডের লেভেল মেন্টেন থাকে তখন কিন্তু কিডনি স্টোনের মত সমস্যা খুব একটা বেশি দেখতে পাওয়া যায় না বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আপনি যদি এক থেকে ছয় মাস নিয়মিত তুলসী পাতা খেতে পারেন তাহলে কিন্তু আপনার এই কিডনি স্টোনের সমস্যা ধীরে ধীরে কমে আসে।

হার্টের হেলথ ভালো রাখে:তুলসী পাতা আমাদের হার্ট হেলথ কেউ কিন্তু প্রটেক্ট করতে সাহায্য করে , যদি তুলসী পাতার পুষ্টিগুণ আমরা দেখতে যাই দেখতে পারবো তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। যখন কোন খাবারের মধ্যে দিয়ে ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে সে ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের প্রোডাকশন বাড়িয়ে দেয়। 
আর এই নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের শরীরে ভেসো ডায়লেটর হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ ওই নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের শরীরে যে সমস্ত ধমনী বা শিরা উপশিরা গুলি রয়েছে। সেগুলিকে প্রসারিত করে রাখতে সাহায্য করে। তারপরে আমাদের শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন ভালো হয় এবং আমাদের শরীরে ব্লাড প্রেসারও থাকে নিয়ন্ত্রণে ।

শরীরের কোলেস্ট্রল কমায়: তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে beta carotene, lutein, Zeaxanthin এবং Beta-cryptoxanthin এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । যেগুলি আমাদের শরীরের থেকে টোটাল কোলেস্টেরল এলডিএল ব্যাড কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা তো কম করতে সাহায্য করে এবং তার সাথে সাথে এ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল গুলিকে দমন করতে সাহায্য করে।

এবং আমাদের আর্টারীতে বা ধমনী নিতে যাতে কোন প্রকারের কোন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস না হয় সে দিক থেকেও সাহায্য করে । তাই আপনি যদি একজন হার্টের পেশেন্ট হয়ে থাকেন বা যদি আপনি কোলেস্টেরলের পেশেন্ট আপনি কিন্তু নিয়মিতভাবে তুলসী পাতা খেতে পারেন আপনার হার্ট হলথের প্রটেকশনের জন্য।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: বর্তমান সময়ের মরণঘাতী রোগ হল ক্যান্সার। মরণবেদে এই ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সহায়তা করে তুলছি পাতা। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিও প্রটেকটিভ উপাদান যেটি আপনার টিউমারের পোস্টগুলোকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে। ফাইটো কেমিক্যাল যেমন এপিজেনিন, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং রোসমারিনিক এসিড। এই সকল উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন। এছাড়াও অগ্নাশয়ের যে সকল টিউমার কোচ দেখা যায় সেগুলো দূর করতে তুলসী পাতা অতুলনীয়। এছাড়াও ব্রেস্ট ক্যান্সারের মতো সমস্যাও দূরে।

ওজন কমায় :  ওজন কমাতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে তুলসী পাতা। কারণ তুলসী পাতা আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা রোধ করতে সাহায্য করে। তাই আপনি অতি সহজেই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। অতি সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা যায় তুলসির পাতার তৈরি আড়াইশো মিলিগ্রামের ক্যাপসুল প্রতিদিন খেলে আপনার অবেসিটি ও লিপিড প্রোফাইল থাকবে আপনের নিয়ন্ত্রণে।

ডায়াবেটিস দূরে রাখে: তুলসী পাতায় রয়েছে স্যাপোনিন , ফ্ল্যাবোনয়েড,ত্রিতারপিনিন নামক উপাদান। এই উপাদানগুলো আপনার ডায়াবেটিস কে দূরে রাখতে বা প্রতিরোধ করতে কার্যকর ভূমিকা পাওয়ার পরে। তাই আপনি প্রতিদিন খাবার আগে তুলসী পাতা খেতে পারেন। কারণ প্রতিদিন সকালে যদি খাওয়ার আগে তুলসী পাতা খান তাহলে আপনার ডায়াবেটিস বা ব্লা চুদা থাকবে আপনার নিয়ন্ত্রণ।

শিশুদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করে: গবেষকদের দাবি শিশুদের যেকোনো শারীরিক সমস্যা তাতে সেটি জ্বর সর্দি কাশি হোক বা পেটে ব্যথায় হোক যেকোনো সমস্যাতে কিন্তু আপনি তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন আপনার শিশুর যখন শারীরিক সমস্যা রয়েছে তখন প্রতিদিন এক চামচ করে তুলসী পাতা রস আপনি খাওয়ান আর যখন আপনার শিশুর সমস্যা থাকবে না ।

তখন আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অন্তত সপ্তাহে দুদিন করে আপনি তুলসী পাতার রস খাওয়াতে পারেন এবং তার সাথে সাথে আপনি যদি নিয়মিত ভাবে আপনি শিশুকে তুলসী পাতা খাওয়াতে থাকেন তাহলে বিভিন্ন প্রকারের সিজনাল ফ্লুর থেকে চিকেন পক্স বা মেজলের মত সমস্যার থেকেও কিন্তু আপনার শিশু অনেক খানি দূরে থাকবে

মাথা ব্যথা দূর করে: তুলসী পাতা আপনার মাথা ব্যাথা সহ শরীরের ব্যথা কমাতে ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিদ্যমান বিশেষ উপাদান গুলো আপনার মাংসপেশিশি খিচুনি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে

মানসিক দুশ্চিন্তা দূর করে:তুলসী পাতা আমাদের শরীরে Adaptogens হিসেবে কাজ করে Adaptogens হল এক ধরনের ন্যাচারাল কম্পাউন্ড যে ন্যাচারাল compound সাধারণত বিভিন্ন প্রকার গাছের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় যে কম্পাউন্ড আমাদের স্ট্রেস লেভেলকে কম করতে সাহায্য করে এবং বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আপনি যদি মেন্টাল স্ট্রেস বা মানসিক দুশ্চিন্তার মতন সমস্যায় ভুগছেন

আপনি নিয়মিতভাবে তুলসী পাতা খেতে পারেন এই তুলসী পাতা আপনার শরীরে Cortisol হরমোনের লেভেল কে ডাউন করতে সাহায্য করে, আর এই Cortisol হরমনকে কিন্তু স্ট্রেস হরমোন বলা হয় এই Cortisol হরমন যখন আপনার শরীরের মধ্যে কম সিক্রেশন হবে তখন আপনি এই মেন্টাল স্ট্রেসের থেকেও কিন্তু অনেকখানি দূরে থাকতে পারবেন ।

হজম ক্ষমতা বাড়ায়: আপনার যদি হজম ক্ষমতা দুর্বল হয়ে থাকে তাহলে আপনি আপনার হাতের গাছের একটা টোটকা ব্যবহার করতে পারেন। সেটা হল তুলসীর পাতা। আমরা যদি খোদা মন্দাই বা হজম শক্তি দুর্বল ভোগে থাকেন তাহলে নির্দ্বিধায় এটি খেতে পারেন। আপনি যদি প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি তুলসী পাতা খেতে পারেন তাহলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং সেই সাথে আপনার রক্ত পরিষ্কার করতেও সহায়তা করবেন।

চোখের সমস্যা দূর করে: আজকাল শিশুদের মধ্যে খুব কমন একটি সমস্যা দেখতে পাওয়া যায় সেটা হলো ড্রাইজ শুষ্ক যোগ্য। তার সাথে সাথে আপনার কনজাংটিভিটিস আন জনির মত সমস্যা এবং যেকোনো প্রকারের চোখের ইনফেকশনের মধ্যে তুলসী পাতা কিন্তু খুব ভালো উপকার দিতে সক্ষম ।আপনি যদি প্রতিনিয়ত তুলসী পাতা খেতে পারেন তুলসী পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি প্রপার্টি আপনার এই সমস্ত চোখের সমস্যাকে কম করতে সাহায্য করে।
তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ । তাই যারা রাতকানা সমস্যায় ভুগছেন তারাও কিন্তু তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে কোন একটা সমতে কিন্তু তুলসী পাতা খেতে পারেন। বেশ কিছু গবেষকদের দাবি আপনার চোখের যে কোন ইনফেকশনে আপনি তুলসী পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন । তবে আমার মতামত হলো তুলসী পাতার রস আপনার চোখে লাগানোর আগে যে কোন একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ সাথে আলোচনা করে নেবেন।

চুল মজবুত করে: আপনি কি চুল পড়ার সমস্যা হচ্ছে এবং আপনার মাথায় কি প্রচুর উকুনের উপদ্রব। তাহলে চুল পড়া এবং আপনার মাথার উপর নিয়ে আর কোন চিন্তা নেই। কারণ আপনি যদি আপনার বাড়ির না থেকে তুলসী পাতা তুলে তার রস ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার মাথায় নতুন করে চুল গজাবে এবং আপনার মাথা উকুন গুলো নিমিষে দূর হয়ে যাবে। তুলসী পাতা খেতে পারেন তাহলে আপনার মাথাব্যথা এবং মাইগ্রেনের মতো সমস্যাও দূর হয়ে।

মুখের ঘা নিরাময় করে: মুখের ঘা বা মাউথ আলসারের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম তুলসী। আপনার যখন মুখের ঘা হবে তখন 10 থেকে 12 টা তুলসী পাতা নিয়ে চিবিয়ে খান। এভাবে সারা দিনে দুইবার কিছুদিন ব্যবহার করুন দেখবেন আপনার মুখের ঘা সহজেই নিরাময়। 

এবং তার সাথে সাথে আপনার মুখের মধ্যে কোন প্রকারের যদি কোন দুর্গন্ধ থেকে থাকে কোন ইনফেকশন থেকে থাকে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। অনেক মানুষদের অ্যাসিডিটির জন্য মুখ টক টক ভাব লাগে কখনো কখনো মুখের মধ্যে তেতো ভাব অনুভব হয়। সে সমস্ত মানুষেরাও কিন্তু নিয়মিতভাবে তুলসী পাতা খেতে পারেন এই সমস্ত সমস্যার থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার জন্য।

পোকামাকড়ের কামড়ের জ্বালা দূর করে: আমাদের শরীরে যখন কোন পোকামাকড় কামড় দেয় বা হুল ফোটায় আমাদের যন্ত্রণা বা জ্বালা অত্যাধিক হতে থাকে । আপনি কি জানেন তুলসী পাতার রস আপনার ওই জ্বালা যন্ত্রনাকে কম করতে সক্ষম। আপনার ক্ষতস্থান যদি ফুলে গেছে সে ফোলা কেউ কম করতে সক্ষম । 
ভবিষ্যতে ওই ক্ষতস্থানে যাতে কোন প্রকারের কোন ইনফেকশন না হয়। সেদিক থেকেও কিন্তু তুলসী পাতা সাহায্য করে। তাই যদি পরবর্তী ক্ষেত্রে কোন প্রকারের কোন পোকামাকড় আপনাকে কামড়িয়ে বা হুল ফুটিয়ে থাকে তাহলে তুলসী পাতার রস ক্ষতস্থানে আধঘন্টা পর পর চার থেকে পাঁচবার লাগিয়ে নেবেন ।দেখবেন আপনার ব্যথা বেদনা কম হবে এবং ভবিষ্যতে গিয়ে সে ক্ষতের থেকে কোন প্রকারের কোন ইনফেকশন হবেনা।

বিভিন্ন ধরনের এলার্জি সমস্যা দূর করেন:দাদ হাজার চুলকানির মতন সমস্যা তো সমাধান করতে সক্ষম তুলসী পাতা । গবেষকদের দাবি আপনার শরীরে যদি কোন প্রকারের দাদ হাজার চুলকানির মতন সমস্যা রয়েছে সেই ক্ষতস্থানে যদি আপনি কিছুদিন তুলসী পাতার রস লাগাতে পারেন।

দেখবেন এই সমস্ত সমস্যাগুলি খুব সহজে নিরাময় হয়ে যায়। বেশ কিছু মেডিকেল জার্নাল থেকে জানা যায় যে, যদি আপনার স্ক্রিনের মধ্যে বা ত্বকের মধ্যে শ্বেতী বা সাদা দাগের মতো সমস্যা রয়েছে সে দাগের মধ্যে যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে তুলসী পাতার রস লাগাতে পারেন সময় সাপেক্ষ হলেও আপনার এই শ্বেতির সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম তুলসী পাতা।

তুলসী পাতা খাওয়ার সতর্কতা

এতক্ষণ তো আমরা আলোচনা করলাম তুলসী পাতার বেশ কিছু চমকপ্রদ উপকারিতা নিয়ে ।এখন আমরা জেনে নেব যে তুলসী পাতা কাদের খাওয়া উচিত নয়। দেখুন তুলসী পাতা একটা ঔষধি গাছ ।এটি খাওয়া সবার জন্যই নিরাপদ।
শুধুমাত্র মাত্র গর্ভবতী মায়েরা এবং যে মায়েরা শিশুদের স্তন পান করান । তাদের কিন্তু তুলসী পাতা থেকে দূরে থাকায় শ্রেয় । তার কারণ গর্ভবতী মায়েরা যদি বেশি পরিমাণে তুলসী পাতা খেয়ে ফেলে, তাহলে তার ইউটেরাস এবং পেলভিক এরিয়ার মধ্যে ব্লাডের ফ্লো বেড়ে যায়। আরে ব্লাডের ফ্লোর বেড়ে যাওয়ার জন্য মিসক্যারিস বা গর্ভপাতের মতন সমস্যা সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে । 

তার সাথে সাথে যে সমস্ত মায়েরা স্তন পান সেই সমস্ত মায়েরা যদি বেশি পরিমাণে তুলসী পাতা খেয়ে ফেলেন তাদের থাইরয়েড লেভেল ডাউন হয়ে যায় । আর থাইরয়েড লেভেল টাউন হয়ে গেলে স্তনের মধ্যে দুধের স্লো কমে যায়। তাই গর্ভবতী মায়েদের এবং সদ্যোজাত শিশুদের মায়েদের তুলসী পাতা না খাওয়াই শ্রেয়।

লেখকের মন্তব্য:তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন।

তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন নিয়ে লিখা আর্টিকেলটি পড়ে আপনি তুলসী পাতা উপকারিতা ব্যবহারবিধি এবং সর্তকতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। যদি তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুন নিয়ে লিখা আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং আপনি যদি সমান্যতম উপকৃত হন তাহলে আপনি আপনার নিকটস্থ বন্ধু বান্ধবদের নিকট আমাদের আর্টিকেলটি শেয়ার করুন। এবং অবশ্যই মন্তব্য করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের এই মন্তব্য ভবিষ্যতে আমাদের অনুপ্রাণিত করে নতুন বিষয় নিয়ে লেখাগুলো ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url