কনডম ব্যবহারের উপকারিতা ও অপকারিতা

কনডম ব্যবহারের উপকারিতা ও অপকারিতা। আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমাদের আপনাদের সামনে হাজির হলাম কনডম বিষয়ে নিয়ে। 

এখন আমরা আলোচনা করব কনডম কি কনডম কিভাবে ব্যবহার করতে হয় কম দামে ব্যবহার উপকারিতা এবং ব্যবহার বিধি সহ আরো অন্যান্য বিষয় নিয়ে। তাই কনডম নিয়ে এবং এর ব্যবহার নিয়ে জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

কনডম

কনডম পুরুষদের জন্য একটি নিরাপদে এবং কার্যকরী জন্মনিয়ন্ত্রণ। যদি এখনো বর্তমানে মেয়েদের জন্যও কনডম তৈরি হয়েছে। এর ব্যবহারে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভ রোধ ছাড়াও যৌনবাহিত রোগ বিস্তার রোধ করা যায়। সারাবিশ্বের জন্মনিয়ন্ত্রণ ও যৌনবাহিত রোগের বিস্তার রোধের জন্য আজ কোটি কোটি দম্পতি কনডম ব্যবহার করছেন।

আজ থেকে প্রায় ৪ হাজার বছর আগে কনডম ব্যবহারের দৃষ্টান্ত ও প্রমাণ পাওয়া যায়। ইতালির প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ১৫৮৪ সালে প্রথম কনডম জাতীয় পদার্থের উল্লেখ করেন। অষ্টম শতা দিতে প্রথম কনডম নামকরণ করা হয়। সাধারণত সে সময় যৌনবাহিত রোগ বিস্তার রোদের জন্য কনডম ব্যবহার করা হতো। প্রথম যুগে কনডম পশুদের নারী থেকে তৈরি করা হতো। 

১৯৪০ সালে রাবার প্রযুক্তি বিকাশের সাথে সাথে কনডমের উৎপাদন ও ব্যবহার বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আধুনিক যুগে রাবার প্রযুক্তির উন্নতির ফলে কনডম এখন লাটেক্স থেকে তৈরি করা হয়। বর্তমান সময়ের কনডম গুলো খুবই পাতলা হয় এতে শুক্রাশক পিচ্ছিল কারক পদার্থ যোগ করা হয়। বর্তমান যুগে কনডমের গ্রহণযোগ্যতা আগ্রহ বাড়ি দিয়েছে কিছু কিছু গন্ডবের ডট প্রযুক্তি চালুর ফলে।

কনডম কিভাবে কাজ করে

কনডম শুক্রাণুকে যৌন পথে ঢুকতে বাধা দেয়। কোন কোন কনডমে যে শুক্রাশক ব্যবহার করা হয় তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিষ্ক্রিয় করে ফেলেন। কনডমের সঠিক ব্যবহার জন্মনিয়ন্ত্রণ ও যৌনবাহিত রোগের বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করে। তবে কনডমের ভুল ব্যবহার ও ফেটে গেলে কর্মদানের সম্ভাবনা থাকে। তাই শুক্রকেট ধ্বংস করে এমন পদার্থ কনডম এর সাথে যোগ করলে এর কার্যকারিতা আরো বেড়ে যায়।

কনডম ব্যবহারের সুবিধা

  • বর্তমান সময়ে কনডম ব্যাপকভাবে জনপ্রিত হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে সেগুলো হল
  • কনডম জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে পুরুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
  • কনডম তুলনামূলকভাবে সস্তা ও সহজলভ্য।
  • জন্মনিয়ন্ত্রণের সাথে সাথে যৌনবাহিত রোগের বিস্তার রোধ করে।
  • সম্ভবত মেয়েদের জরার মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে কনডম কাজ করে।
  • কনডমের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
  • যখন প্রয়োজন তখন ব্যবহার করলেই চলে বিধায় এর গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে।

কনডমের অতিরিক্ত উপকারিতা

  • যাদের তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়, যৌন চিকিৎসকরা তাদের অনেক সময় কনডম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কোন কোন ক্ষেত্রে পুরুষ যদি সহবাসের সময় যৌন উত্তেজনা বজায় রাখতে ব্যর্থ হন তবে কনডম ব্যবহারে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হতে পারে। কারণ কনডমের মুখের রাবার আঠা বলে উত্তেজনা বজায় রাখতে কিছুটা সাহায্য করে।
  • পিচ্ছিল কনডম কোন কোন দম্পত্তির ঘর্ষণজনিত অস্বস্তি কমায়।
  • কনডম জন্মবাহিত রোগ বিস্তার রোধ করে ব্যবহারকারীকে বন্ধ্যাত্ব থেকে রক্ষা করতে পারে। কারণ যৌনবাহিত রোগ বন্ধ্যাতার একটি অন্যতম কারণ।
  • কনডম ব্যাপারে জড়ার মুখের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা কমে যায় বলে ধারণা করা হয়।
  • কোন নারীর বীর্য বা সু প্রকৃতি অ্যালার্জি হলে সেক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার করা যায়। বিরল ক্ষেত্রে পুরুষের বীর্যের বিপরীতে নারী দেহে যে অ্যান্টি বডি তৈরি হয় তা বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি করতে পারেন। ক্রমাগত কনডমের ব্যবহারে তা অনেক সময় প্রশমিত হয় এবং ওই নারী গর্ভবতী হতে পারে।

কনডম ব্যবহারে অসুবিধা

  • কনডম যারা ব্যবহার করতে পারবেন
  • যে কোন প্রজনন সক্ষম পুরুষ জন্মনিয়ন্ত্রণ ও যৌনবাহিত রোগের সংক্রমণ রোধের জন্য কনডম ব্যবহার করতে পারবেন।
  • কনডম ব্যবহারের জন্য কোন ডাক্তারি পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। তাই যেসব দম্পতি কোন শারীরিক কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেনা তারা অনাসে কনডম ব্যবহার করতে পারেন না। যারা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য স্থায়ী অথবা একনাগারে পদ্ধতি গ্রহণ করতে চান না।

কনডম যারা ব্যবহার করতে পারবেন না

  • কনডম সবাই ব্যবহার করতে পারবেন। কদাচিৎ দুই একজন কনডম পরে যদি উত্তেজনা বজায় রাখতে অথবা চরমপুলকে ব্যর্থ হন তবে তাদের জন্য কনডম উপযোগী নয়।
  • যাদের লেটিক্সে এলার্জি আছে তারা ননলেটিক্স কনডম ব্যবহার করতে পারেন।|

কনডমের ভুল ব্যবহার

  • কেউ কেউ মনে করতে পারেন যে কনডম বীর্যপাতের আগে পড়লেই চলে কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। প্রসঙ্গে থেকে বীর্যপাতের আগে যে রস নিঃসৃত হয় তাতেও শুক্রকীট থাকে ফলে গর্ভধারণ হতে পারে। তাই অবশ্যই সহবাস শুরু করার আগেই কনডম পরে নিতে হবে।
  • কনডম ব্যবহারে যৌনক্রিয়া অস্বস্তিকর মনে হলে পদ্ধতিটি বাদ দেয়ার আগে প্রয়োজনে পানি ভিত্তিক তরল পিচ্ছিল কারক ব্যবহার করতে পারেন।
  • একবার ব্যবহার করা কনডম পুনরায় আবার ব্যবহার করা যাবে না।

কনডমের ব্যবহার বিধি

  • সহবাস শুরু আগে কনডম প্যাকেট থেকে খুলে উত্থিত পুরুষাঙ্গে পরে নিতে হবে।
  • কনডম পড়ার সময় সামনের অংশ টিপে ধরে নিতে হবে যেন উথিত অঙ্গে পরার পর সামনে ১.৫ সেন্টিমার অতিরিক্ত জায়গায় বীর্য ধারণের জন্য থাকে এবং সেখানে কোন বাতাস না থাকে। যদি বাতাস থাকে সেক্ষেত্রে কনডম ফেটে যেতে পারে।
  • বীর্যপাত হওয়ার পরপরই উত্থিত থাকা অবস্থায় কনডমের গোড়া চেপে ধরে যোনিপথ থেকে প্রসঙ্গ বের করতে হবে। এই সতর্কতার উদ্দেশ্য হল যাতে করে কোন শুক্রাণু যোনিপথে ঢুকে যেতে না পারে।

কনডম ব্যবহারের সমস্যা ও তার সমাধান

কনডম ব্যবহারে কেউ কেউ সমস্যা অনুভব করে থাকে। এ সমস্যার সমূহ এবং তার সমাধান নিচে উল্লেখ করা হলো।

সমস্যা- কনডম অনুভূতি কমায় বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেন। 

সমাধান- পিচ্ছিল কনডম ব্যবহার করলে সমস্যা সমাধান হতে পারে। প্রয়োজনে পানিতে দ্রবণে পিচ্ছিল পদার্থ যেমন গ্লিসারিন ব্যবহার করে অনেক বেশি আনন্দ পান। তাছাড়া ত্বকের রঙের বা স্বচ্ছ কনডম ব্যবহার করা ভালো। পেট্রোলিয়াম জাতীয় পিচ্ছিল কারক যেমন ভেসলিন ব্যবহার না করাই ভালো কারণ তাতে কনডমের ক্ষতি হতে পারে।

সমস্যা- যৌনক্রিয়ার সময় পুরুষদের এটা ব্যবহার করতে হয় বলে অনেকে ঝামেলা মনে করে। 

সমাধান- এক্ষেত্রে কনডম পরানোর দায়িত্বটি যদি সঙ্গিনী পালন করেন তবে ব্যাপারটা সহবাস প্রক্রিয়ায় পুরুষের মানসিকতার ব্যাঘাত না ঘটিয়ে সেটিকে বরং আরো আনন্দময় করে তুলতে পারে।

সমস্যা- কনডমে এলার্জির অভিযোগ।

সমাধান- নেটেক্স কনডম এলার্জির সম্বন্ধ না খুবই কম। প্রজনন তন্ত্রের জীবাণু সংক্রমনের জন্য কখনো কখনো অ্যালার্জি এর মত অস্বস্তি হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে পণ্য ব্রান্ডের কনডম ব্যবহার করা যেতে পারে।

সমস্যা- কনডম ফেটে যাওয়া

সমাধান- সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে কনডম ফেটে যায়। সঠিক ব্যবহার এবং প্রয়োজন বোধ পিচ্ছিল কারক পদার্থ ব্যবহার করলে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। অনেক দিনের পুরনো, রোগ এবং ছ্যাতস্যাঁত জায়গায় রাখা বা খোলা অবস্থায় রাখা কনডম ব্যবহার করা উচিত নয়। কনডম ব্যবহারের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন কনডমের বাতাস যেন না ঢুকে যায়।

সমস্যা- কনডম কোথায় রাখতে হবে এবং ফেলতে হবে। 

সমাধান- কনডমগুলো শুকনো জায়গায় যেখানে সরাসরি রোধ বা ফ্লোরেসেন্ট বাল্বের আলো পড়ে না সেখানে রাখতে হবে। ব্যবহার করে এমন স্থানে ফেলতে হবে যাতে অস্বস্তি বা লজ্জা কর অবস্থার পড়তে না হয়। কাগজে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে অথবা সম্ভব হলে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে।

সতর্কতা- কনডম পায়খানার পেনে ফেললে সুয়ারেজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

শেষ কথা:কনডম ব্যবহারের উপকারিতা ও অপকারিতা

কনডম ব্যবহারের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে লেখা আর্টিকেলে যদি আপনি এখনো মনোযোগ দিয়ে না পড়ে থাকেন তাহলে এখনি আমাদের আর্টিকেল প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আমরা যদি আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে কনডম ব্যবহার করতে হয় কনডম ব্যবহারের সুবিধা কনডম ব্যবহারের উপকারিতা অসুবিধার কনডম কারা ব্যবহার করতে পারবেন কনডম ব্যবহার সম্পর্কে ভুল কিছু ধারনা কনডম ব্যবহারের সাধারণ কিছু সমস্যা ও তার সমাধান বিষয়। তাই আপনি যদি এখনও মনোযোগ দিয়ে না পড়েন তাহলে এখনই পড়ে ফেলুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আরিফুল প্লাস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url